প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুণগত শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ বিনির্মাণে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দর্শন বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ৮ম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র শিক্ষক মিলনায়তনে (টিএসসি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক প্রদীপ রায়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ঢাবি’র উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শহীদ আকতার হুসাইন। অনুষ্ঠানে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও দর্শন বিভাগের সাবেক ও বর্তমান বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন,দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রবান্ধব শিক্ষকের পদচারণা থাকবে। আমরা চাই সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিজ্ঞান গবেষণায় আরও অধিকতর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, ছাত্রবান্ধব শিক্ষকদের পদভারে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ভরে উঠবে এবং জাতির অগ্রগতিতে দৃশ্যমান ও কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, উচ্চ শিক্ষায় তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে প্রযুক্তিভিত্তিক সুযোগ-সুবিধা অত্যাধুনিক ও সময়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে। শুধু ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ থাকলেই হবে না। তা হতে হবে উচ্চ গতি সম্পন্ন। ই-বুক, ই-টেক্সট বুক, ই-জার্নাল, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রবন্ধের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হতে হবে।
ভাষা শহীদদের কথা স্মরণ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, এ কথা অস্বীকার করার সুযোগ নেই যে, ভাষা আন্দোলনই আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে। বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হওয়ায় এই ভূ-খন্ডের মানুষ বিশ^ব্যাপী হয়েছে পরম সম্মানিত।
তিনি বলেন, মানব অভিজ্ঞতার এমন কোনো দিক নেই, যা দর্শন রাজ্যের বাইরে পড়ে। মানব সভ্যতা বিকাশে মানুষের সামগ্রিক উন্নতিতে দর্শনের দান অপরিসীম। দর্শনের সঙ্গে আইনের সম্পর্কের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, দর্শনের জ্ঞান থাকলে মানুষ সহজাত প্রবৃত্তি থেকে আইন মানে ও আইন মান্যকারী হয়। দর্শন ও আইনের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত সুদৃঢ়। একটিকে বাদ দিয়ে অপরটি কল্পনা করা যায় না। প্রধান বিচারপতি বলেন, আইনের ভিত্তি অনেকাংশে দর্শনের ভিত্তির ওপর নির্ভরশীল। দর্শন সবসময় বাস্তবতার বিবেচনায় আইনের মতো শক্তিশালী নয়। তবে গণতন্ত্রের বিকাশে রাষ্ট্র ও সমাজ বিনির্মাণে আইনের প্রয়োগের পাশাপাশি দর্শনের ভূমিকা কোন দিক থেকেই কম নয় বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।