স্বপ্ন পূরন হলো না জিপিএ ৫ পাওয়া ছাত্র আকাশের

0
360

কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ প্রাথমিক ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েও নিজের স্বপ্ন পূরন করা হলো না মেধাবী এই স্কুল ছাত্র আকাশের।
তাকে বাধ্যতামূলক ছাড়পত্র দিয়ে কুষ্টিয়ায় বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে বের করে দিয়েছে। দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে একজন মেধাবী ছাত্র সে। স্বপ্ন ছিলো বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভালো ফলাফল করা ও একজন সু-নাগরিক হওয়া। অচিরেই সেই স্বপ্ন মাটির সাথে মিশে গেল তার। সেখান থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া হল না। বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষার উর্ত্তীন হওয়ার প্রসংশাপত্র পাওয়ার পরিবর্তে সে পেল বাধ্যতামূলক ছাড়পত্র।
দশম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র আকাশ কুমার বিশ^াস বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার অভিযোগে অভিযুক্ত বিডিআর সদস্য বাবু কুমার বিশ্বাসের ছেলে।
আকাশের পরিবার বলছে, আকাশের পিতা বিডিআর সদস্য বাবু কুমার বিশ্বাস বিদ্রোহের ঘটনার অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার দায়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ এ ছাড়পত্র দিয়েছে। বাবার দায়ে মেধাবী শিক্ষার্থীকে ছাড়পত্রসহ স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে তাকে। আকাশের বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ সে বিডিআর বিদ্রোহের সাথে জড়িত ছিল।
আকাশ কুমার জানান, বিনা অপরাধে স্কুল থেকে আমাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। আমার পিতা বিডিআর ছিলো এটাই কি আমার অপরাধ? আমি বিডিআরের সন্তান তাই কি আজ আমাকে এ পরিস্থিতির সম্মূখিন হতে হলো? আমি তো চেয়েছিলাম এই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে প্রসংশাপত্র নেব। কিন্তু আজ পেলাম আমি বাধ্যতামূলক ছাড়পত্র। আমাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার আগেই স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
সে আরো জানায়, আমি তো কোন দোষ করিনি। তবে কেন আমাকে এই শাস্তি দেওয়া হলো?
আকাশের মা প্রার্থনা রানী জানান, আমার স্বামীকে ২০১১ সালে বিডিআর থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়। এরপর থেকে আমরা অদ্যবধি রেশন ও পেনশন পেয়ে আসছি । এ অবস্থায় হঠাৎ করেই আমার সন্তানকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। এতে আমার সন্তানের শিক্ষার উপরে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। আকাশের শিক্ষা জীবন ধ্বংসের আশংকায় পড়ে গেছে এখন।
আকাশের পরিবারের মতই এ ঘটনা মানতে পারছে না তারা সহপাঠিরাও। এনিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে সহপাঠিরা কথা বলেও কোন কাজ হয়নি।
আকাশের সহপাঠী আবু জুবায়ের ইমন জানান, আকাশের পিতা বিদ্রোহের ঘটনার অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ায় নাকি তাকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এতে আকাশের তো কোন দোষ নেয়। তবে কেন তাকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হবে। তাই আমরা স্যারের কাছে গিয়েছিলাম কিন্তু কোন কাজ হয়নি। আমরা চাই আকাশ আবার স্কুলে আসুক। আমাদের সাথে একসাথে লেখাপড়া করুক।
বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষ রবিউল হক জানান, বিজিবি হেড কোয়ার্টারের নির্দেশে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। এছাড়া আমি আর কিছু বলতে পারবো না।
তবে আকাশের এই ছাড়পত্র দেওয়ার নির্দেশের কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি তিনি।
তবে আকাশের এই বাধ্যতামূলক ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়ে কোন কথা বলতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবী, বিজিবি হেড কোয়ার্টারের নির্দেশে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিজিবির উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলতে চাইলেও তারা রাজী হননি।
এদিকে এঘটনায় চরম ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে এলাকাবাসী। তারা বলছেন, শিক্ষা যে কোন শিশুর মৌলিক অধিকার। একজনের অপরাধে আরেকজনের শাস্তি দেওয়া উচিৎ নয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here