মালয়েশিয়ার সঙ্গে জিটুজি প্লাস প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী যাওয়ার সমঝোতা স্মারকের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আগামী তিন বছরে ১৫ লাখ কর্মী মালয়েশিয়ায় যাবেন। এক মাসের মধ্যেই এ কার্যক্রম শুরু হবে। এ লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারকের খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। সকালে সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদসচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়ার ২০১২ সালের সমঝোতা স্মারক এবং ২০১৪ সালের স্মারক বাতিল হয়ে যাবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদসচিব। এ সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী অভিবাসন কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার সোর্স কান্টি হিসেবে মর্যাদা পাবে। সোর্স কান্ট্রির মর্যাদার বিষয়ে তিনি বলেন, এর আগে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া কর্মীরা শুধু প্ল্যান্টেশন (বৃক্ষরোপণ) খাতে কাজ করতে পারতেন। নতুন সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী বাংলাদেশি কর্মীরা সেবা খাত, ম্যানুফেকচারিং এবং নির্মাণ খাতে কাজ করতে পারবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়ায় কাজের ক্ষেত্র ব্যাপকভাবে প্রসারিত হলো। তবে, সংশ্লিষ্ট খাতে কাজ করতে হলে কর্মীকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
নতুন সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, নারীরাও মালয়েশিয়ায় কাজ করতে যেতে পারবেন। সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদসচিব জানান, কর্মী নিয়োগের জন্য মালয়েশিয়া থেকে চাহিদা আসবে। তার প্রেক্ষিতে বিএমইটির তথ্য ভাণ্ডারে নিবন্ধিতদের থেকে আগ্রহীদের মালয়েশিয়ায় পাঠানো হবে। অভিবাসন ব্যয়ের সবটুকু নিয়োগকর্তা বহন করলেও প্রাথমিক কিছু খরচ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে বহন করতে হবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদসচিব। এদিকে মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন আইন,২০১৬-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করলেও তা অনুমোদন পায়নি। আইনটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ফেরত পাঠানো হয়েছে।
সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, অভিবাসন ব্যয় ৩৪ থেকে ৩৭ হাজারের মধ্যে হবে। এই ব্যয়ের সবটুকু করবে কর্মী নিয়োগকারী (সংশ্লিষ্ট কম্পানির মালিক)। বিদেশে কর্মীদের বেতন পরিশোধ হবে ব্যাংকের মাধ্যমে। এর আগে জিটুজি (সরকার টু সরকার) প্রক্রিয়ায় কর্মী প্রেরণের প্রচেষ্টা সফল না হওয়ার পরিপ্রক্ষিতে জিটুজি প্লাস প্রক্রিয়ায় নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ পেতে যাচ্ছে। জিটুজি প্রক্রিয়ায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর এ ধরনের সুযোগ ছিল না।