তাইওয়ানে ভূমিকম্প : মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪০, জীবিতের সম্ভাবনা ক্ষীণ

0
522

তাইওয়ানে গত শুক্রবারের ভূমিকম্পের পাঁচ দিন পরও ধ্বংসাবশেষ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। সোমবার পর্যন্ত ৩৫ মরদেহ উদ্ধারের কথা জানা যায়। তবে মঙ্গলবার তা বেড়ে ৪০ জনে দাঁড়িয়েছে বলে উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন। এ ছাড়া কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এখন পর্যন্ত ১০৭ জন নিখোঁজের কথা বলছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। উদ্ধার কেন্দ্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম জানায়, ধসে পড়া ১৭তলা ভবনটি থেকে ২১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া উই গুয়ান রেসিডেন্সিয়াল কমপ্লেক্সেরই ৩৮ জন, যারা হাসপাতালে পৌঁছার আগেই মারা যান। এদিকে, ভূমিকম্পের পর ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ায় ধসে পড়া ভবনটি থেকে আর কাউকে জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা। ধ্বংসাবশেষ সরাতে ও দ্রুত কাজ করতে তারা ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছেন। এর আগে সোমবার ওই ভবনটি থেকে চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়, যার মধ্যে ৪ বছর বয়সী একটি শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। এ ছাড়া ভবনটি ধসে পড়ার কারণ অনুসন্ধান শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দিনগত রাত ১টা ৫৭ মিনিটে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় তিয়ানান শহরে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল দক্ষিণাঞ্চলীয় ইউজিং থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে। প্রাথমিক ভূমিকম্পটির মাত্রা ৬.৭ বলে জানায় ‍মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস। পরে তা কমিয়ে ৬ দশমিক ৪ জানায় সংস্থাটি। প্রায় ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড স্থায়ী ছিল ভূমিকম্পটি। এ ঘটনায় কোনো সুনামি সর্তকতা জারি করা হয়নি। সংবাদমাধ্যম জানায়, তিয়ানান শহরে ধসে পড়া ওই ১৭তলা ভবনে ৬০টি পরিবারের বাস ছিল। সেখান থেকেই শিশুসহ ১৬ জনের মরদেহ ও ৪৩৬ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাইওয়ানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানায়, ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকা পড়াদের উদ্ধারে প্রায় এক হাজার উদ্ধারকর্মীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর ৮৪০ সদস্য, ছয়টি হেলিকপ্টার ও ২৩টি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর কাজ করে যাচ্ছে। এদিকে, ওই ভবনটি ছাড়া তিয়ানানের আরও বেশ কয়েকটি ভবন এ ভূকম্পনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো থেকে এখন পর্যন্ত দুজনের প্রাণহানির খবর জানিয়েছে সংবাদ সংস্থাগুলো। ইউএসজিএস বলেছে, ২০ লাখ অধিবাসীর শহর তিয়ানানে আঘাত হানা ভূমিকম্পটি অগভীর ছিল। যার অর্থ, এর শক্তি বিবর্ধিত হয়েছে। তাইওয়ানজুড়ে ভূকম্পন পরবর্তী বেশ কয়েকটি পরাঘাতও অনুভূত হয়েছে। এমনকি তিয়ানান থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরবর্তী রাজধানী তাইপেও কেঁপে উঠেছে। ১৯৯৯ সালে দেশটিতে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here