শ্রীলঙ্কাকে পাত্তা না দিয়ে ফাইনালে ভারত

0
439

বাংলাদেশের জন্য এটা স্বপ্নের যুব বিশ্বকাপ। দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ। তারা এখন সেমিফাইনালে। বৃহস্পতিবার ফাইনালে ওঠার লড়াই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। আর ফাইনালে উঠতে পারলে বাংলাদেশকে শিরোপার জন্য লড়তে হবে এবারের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সবচেয়ে ধারাবাহিক দলের বিপক্ষে। বুধবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কাকে একরকম উড়িয়ে দিয়েই তিনবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত উঠেছে ফাইনালে। ভারতীয়দের জয় ৯৭ রানের। অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ তাদের সামনে।

রাহুল দ্রাবিড়ের কোচিংয়ের ভারত দলটা দুর্দান্ত। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেমিফাইনালের ম্যাচটায় শুরুর দিকে কঠিন পরীক্ষায়ই পড়েছিল তারা। রানও কম হয়ে গিয়েছিল। শেষ ১০ ওভারে ৭ উইকেট হারাতে হলেও ৮৯ রান তুলেছে তারা। যেখানে প্রথম ১০ ওভারে ২ উইকেটে মাত্র ৩৩ রান ছিল তাদের। ম্যান অব দ্য ম্যাচ অমলপ্রিত সিংয়ের ৭২, সরফরাজ খানের ৫৯, ওয়াশিংটন সুন্দরের ৪৩ রানে শেষ পর্যন্ত ভালো একটি সংগ্রহ পায় তারা। ৯ উইকেটে করে ২৬৭ রান। এরপর ভারতের পেসারদের সাথে স্পিনাররাও সমান ভালো পারফরম্যান্স করেছেন। শ্রীলঙ্কা কখনোই এই ম্যাচ জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি। ৪২.৪ ওভারে তারা অল আউট হয়েছে ১৭০ রানে। লঙ্কানদের ইনিংসে নেই একটিও ফিফটি।

বড় রানের বোঝা মাথায় নিয়ে শ্রীলঙ্কার ইনিংস চলেছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। ১৩ রানের মধ্যেই দুই ওপেনারকে হারিয়েছে তারা। প্রথম ওভারেই পেসার আভেস খান তুলে নেন আভিস্কা ফার্নান্দোকে। শুরুর ধাক্কা আর কখনোই কাটিয়ে ওঠা হয়নি লঙ্কানদের। ৪২ রানের সময় তৃতীয় উইকেট হারিয়েছে।

কামিন্দু মেন্ডিস (৩৯) ও শাম্মু আশান (৩৮) প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছেন। ৪৯ রান এসেছে চতুর্থ উইকেট জুটিতে। বাঁ হাতি স্পিনার মায়াঙ্ক ডাগার তুলে নেন মেন্ডিসকে। এরপরই রান আউট হন আশান। বিশাদ রান্দিকা ২৮ ও দামিথা সিলভা ২৪ রান করেছেন। কিন্তু দলকে জেতানোর মতো কিছু করতে পারেননি কেউ। আভেস ২ উইকেট নিয়েছেন। ডাগার পান ৩ উইকেট।

এর আগে শ্রীলঙ্কার দুই পেসার আসিথা ফার্নান্দো ও লাহিরু কুমারা শুরু থেকে চাপের মুখে রেখেছেন ভারতকে। টস জিতে সকালের সুবিধাটা নিতে চেয়েছে বলেই ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় শ্রীলঙ্কা। প্রাথমিক ফল পেতে অবশ্য নবম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে তাদের। কোয়ার্টার ফাইনালে সেঞ্চুরি হাঁকানো রিশাব পান্ত ১৪ রানেই আউট। ফার্নান্দোর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। অন্য ওপেনার অধিনায়ক ইশান কিশান ও (৭) পরের ওভারে কুমারার বলে উইকেটের পেছনেই ক্যাচ দিয়েছেন।

২৭ রানে ২ উইকেট তুলে নিয়ে লঙ্কানরা চেপে ধরেছিল ভারতকে। দুই ব্যাটসম্যান অমলপ্রিত সিং ও সরফরাজ খান ধীরে ধীরে এই চাপ কমিয়েছেন। বিরুদ্ধ পরিবেশে ৯৬ রানের চমৎকার জুটি গড়েছেন তারা। এই টুর্নামেন্টে নিয়মিত রান পাওয়া সরফরাজ ৫৯ রান করে ফার্নান্দোর শিকার হয়েছেন। পরে আবার আঘাত হানেন লঙ্কানদের ইনিংসের সেরা বোলার ফার্নান্দো।

তার আগে অমলপ্রিতের সাথে চতুর্থ উইকেটে ৭০ রানের জুটি হয়েছে ওয়াশিংটন সুন্দরের। স্ট্রাইক রোটেট করে বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তোলার চেষ্টা করেছে এই জুটি। প্রায় ৬ গড়ে রান তুলেছেন তারা। ৪০ ওভার পেরুনোর পর বিচ্ছিন্ন হয়েছেন। অমলপ্রিত ৭২ রান করেছেন। সুন্দরের ব্যাট থেকে এসেছে ৪৩ রান।

আরমান জাফর ১৬ বলে ২৯ রানের একটি ঝড়ো ইনিংস খেলে গেছেন। শেষ দিকের রানে অবদান আছে মায়াঙ্ক ডাগারের ১৭ ও মহিপাল লমরোরের ১১ রানেরও। শেষ স্পেলে জাফরেরটিসহ ২ উইকেট নিয়েছেন ফার্নান্দো। ডান হাতি এই পেসার ১০ ওভারে ৪৩ রানে শিকার করেছেন ৪ উইকেট। বাঁ হাতি পেসার কুমারা পেয়েছেন ২ উইকেট। ২টি উইকেট বাঁ হাতি স্পিনার থিলান নিমেশেরও। কিন্তু লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা পারেননি ভারতের বোলারদের হার মানাতে। শেষ হাসি তাই ভারতের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here