অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সরকার স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে : অর্থমন্ত্রী

0
629

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, সরকার শুরু থেকেই পরিকল্পিত অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর জোর দিয়ে আসছে। উন্নয়নের চাকা চলমান রেখে দেশের অর্থনীতিকে আরো গতিশীল ও চাঙ্গা করতে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
তিনি গতকাল সংসদে সরকারি দলের সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আবির্ভাব সত্ত্বেও ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত গড়ে ৬.১৩ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়। অথচ একই সময়ে বিশ্ব প্রবৃদ্ধি গড়ে শতকরা ৩ শতাংশের নিচে ছিল। জিডিপি প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি মাথাপিছু আয় বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৩১৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, সরকারের বর্তমান লক্ষ্য হলো ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশের কাতারে সামিল হওয়া। ফলে বিগত মেয়াদের ধারাবাহিকতায় চলতি মেয়াদে উন্নয়ন কর্মকান্ডের তালিকায় নতুন বেশ কিছু কার্যক্রম যুক্ত হয়েছে। বর্তমান অর্থবছরের জন্য প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ শতাংশ, যা মধ্যমেয়াদে ৮ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য রয়েছে।
তিনি বলেন, অর্থনীতিকে গতিশীল ও চাঙ্গা করতে আমাদের গৃহীত পদক্ষেপসমূহের মধ্যে রয়েছে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা এবং ৬ষ্ঠ ও ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ভারসাম্য বজায় রাখার মাধ্যমে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন, অভ্যন্তরীণ চাহিদার গতি সচল রাখা।
মন্ত্রী বলেন, উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে ক্রমপুঞ্জিভূত মূলধন বাড়ানো। গত দশ বছরে মোট বিনিয়োগ বেড়ে জিডিপির ২৫.৮ শতাংশ থেকে ২৮.৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। চলতি অর্থবছরেও মোট বিনিয়োগ হয়েছে ৪ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকারও ওপরে, যা জিডিপির প্রায় ২৯ শতাংশের মধ্যে সরকারি বিনিয়োগ জিডিপি’র ৬.৯ শতাংশ এবং বেসরকারি বিনিয়োগ জিডিপির ২২.১ শতাংশ। সরকারের লক্ষ্য হলো মধ্যমেয়াদে ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ জিডিপির ২৪.০ শতাংশে উন্নীত করা। একই সময়ে সরকারি বিনিয়োগও জিডিপির ৭.৮ শতাংশে উন্নীত করা হবে।
তিনি বলেন, ২০২১ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন তথা শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান, উৎপাদন, রপ্তানি বৃদ্ধি ও বহুমুখীকরণকে উৎসাহিত করতে সম্ভাবনাময় এলাকায়সমূহে ২০৩০ সালের মধ্যে ১শ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টির কার্যক্রম চলমান। আরো ২৫টির বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হলেও ব্যক্তিগত খাতে বিনিয়োগ প্রসারিত হবে। ২০২১ সালের মধ্যে জাতীয় আয়ে শিল্প খাতের অবদান ৩০ থেকে ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here