সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে : মোজাম্মেল হক

0
379

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করছে।
তিনি আজ সংসদে সরকারি দলের সদস্য ঊষাতন তালুকদারের এক প্রশ্নের জবাবে আরো বলেন, বর্তমান সরকার সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতার পরিমাণ ৯শ’ টাকা থেকে পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি করে ৮ হাজার টাকায় এবং ভাতাভোগীর সংখ্যা ১ লাখ থেকে দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে ২ লাখে উন্নীত করা হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে মাসিক সম্মানী ভাতা ১০ হাজার টাকায় উন্নীত করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অসীম সাহসিকতার স্বীকৃতিস্বরূপ ৬৭৬ জন খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে বর্তমানে বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাকে মাসিক ৬ হাজার টাকা, বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাকে মাসিক ৮ হাজার টাকা, বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাকে মাসিক ১০ হাজার টাকা এবং বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে মাসিক ১২ হাজার টাকা হারে সম্মানী ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও চলতি বছরের জুলাই থেকে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাগণের মাসিক সম্মানী ভাতা কয়েকগুণ বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন শ্রেণীর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের মাসিক রাষ্ট্রীয় ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করে পঙ্গুত্বের হার অনুযায়ী মাসিক সর্বনিম্ন ৯ হাজার ৭শ’ টাকা এবং মাসিক সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের মেধাবী সন্তান ও তাদের পরবর্তী প্রজন্মের লেখাপড়ায় সহায়তা ও উৎসাহ প্রদানের জন্য বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট বর্তমানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে অধ্যায়নরতদেরকে অন্তর্ভুক্ত করে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৮শ’ জন ছাত্র-ছাত্রীকে এ বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় অংশ হিসেবে প্রতি বছর ৬শ’ জন করে সর্বমোট ৩ হাজার জনকে এ বৃত্তি প্রদানের সংস্থান করা হয়েছে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ওপর দেশের অভ্যন্তরে ‘পিএইচডি’ করার জন্য ২ জনকে পূর্ণ বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাহত ও মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে (অনধিক ২ কন্যা) প্রতি কন্যার জন্য এককালীন ১৯ হাজার ২শ’ টাকা হারে আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। ভাতাভোগী যুদ্ধাহত ও মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে ২টি ঈদে মূল ভাতার সমপরিমাণ ঈদ বোনাস প্রদান করা হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার জন্য বাসস্থান নির্মাণ’ প্রকল্প নামে ২২৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটিতে ২ হাজার ৯৭১টি বাসস্থান নির্মাণের সংস্থান রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে ২ হাজার ৩৮৮টি ইউনিট নির্মাণের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে ১ হাজার ১০৫টি ইউনিটের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ১ হাজার ১৮৮টি ইউনিটের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে এবং ৯৫টি দরপত্র কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যানুপাতে মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসনের জন্য ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প প্রণয়নের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here