দেশে ই-টিআইএনধারী করদাতার সংখ্যা ১৮ লাখ ৬১ হাজার ৬৮২ জন : অর্থমন্ত্রী

0
367

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বর্তমানে দেশে ই-টিআইএনধারী করদাতার সংখ্যা ১৮ লাখ ৬১ হাজার ৬৮২ জন।
তিনি বলেন, এর মধ্যে ব্যক্তি পর্যায়ের করদাতা ১৭ লাখ ৭৬ হাজার ৪০১ জন ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা ৮৫ হাজার ২৮১ জন।
অর্থমন্ত্রী গতকাল সংসদে বিএনএফ’র এস এম আবুল কালাম আজাদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ব্যক্তি শ্রেণির ১০ লাখ ৪০ হাজার ৩৫৪ এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের ২৩ হাজার ১১ জনসহ মোট ১০ লাখ ৬৩ হাজার ৩৬৫ জন করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন।
তিনি বলেন, নতুন করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য বর্তমান সরকারের গত মেয়াদে এবং চলতি মেয়াদে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর অনুবিভাগ নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
মুহিত বলেন, কর অঞ্চলসমূহ বিভিন্ন উপজেলা/বিজনেস গ্রোথ সেন্টার/গুরুত্বপূর্ণ স্পটে জরিপ কার্যক্রম ও ‘স্পট এ্যাসেসমেন্ট’ পরিচালনার জন্য জন প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে নিয়ে সভা অনুষ্ঠান ও ‘স্পট এ্যাসেসমেন্ট’ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, জরিপ কার্যক্রম ২০১২ সালের আওতায় ২৯টি কর অঞ্চলে নতুন করদাতা সনাক্তকরণের লক্ষ্যে গৃহ সম্পত্তি, ব্যবসা, পেশাগত আয়, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ, অর্থনৈতিক গ্রোথ সেন্টার, শপিং মল ইত্যাদিতে তথ্য সংগ্রহের কাজ ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে শেষ হয়েছে এবং জরিপ কার্যক্রম ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২০১৫ সালের জুনে শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে জরিপ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে আগামী ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে তিন লাখ নতুন করদাতা সনাক্ত করা সম্ভব হবে।
মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় করদাতা সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন প্রচার, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় আয়কর সংক্রান্ত নাটক প্রচার, সারাদেশে আয়কর মেলার আয়োজন, জাতীয় আয়কর দিবস পালন ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
মুহিত বলেন, দেশের বেসরকারি খাতে বেতনভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করনেটের আওতায় আনার লক্ষ্যে সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল, প্রাইভেট হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, প্রাইভেট কোম্পানি, টিভি চ্যানেল, অভিজাত হোটেলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামের তালিকা ও বেতন বিবরণী সংগ্রহ করা হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, রেজিস্ট্রার অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে হালনাগাদ সকল কোম্পানির নাম, কোম্পানির পরিচালকের নাম, ঠিকানা, টিআইএন সংগ্রহ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, করনেট সম্প্রসারণ ও করদাতাদের উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসন, ব্যবসায়ী ও অংশীজনদের সমন্বয়ে রাজস্ব সংলাপ আয়োজন করা হচ্ছে।
মুহিত বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ই-টিআইন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পেশাগত আয়, ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সুদ আয় থেকে টিআইএন না থাকলে শতকরা ১৫ ভাগ হারে উৎসে কর কর্তনের বিধান চালু করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, কর পরিশোধ বিমুখ অথবা কর ফাঁকি হ্রাস করণের লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে লিগ্যাল ও ইনফোর্সমেন্ট বিভাগে চালু করা হয়েছে। এছাড়া অডিট কার্যক্রমকে আধুনিক করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলকে আরো কার্যকরী করা হয়েছে। প্রতিটি কর অঞ্চলে একটি করে কর ফাঁকি ও গোয়েন্দা সেল গঠন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, টিআইআরএস’র মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহপূর্বক নতুন করদাতা সনাক্ত এবং পুরাতন করদাতাদের আয়কর ও সম্পদ সংক্রন্ত প্রদর্শিত তথ্যাবলী যাচাই করা সম্ভব হবে। এর প্রেক্ষিতে কর ফাঁকি রোধ এবং টিআইএন জালিয়াতিসহ অন্যান্য জালিয়াতি রোধ করা সহজ হবে।
তিনি জাতীয় পার্টির বেগম নুর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, চলতি অর্থ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সাময়িক হিসাব অনুযায়ী ৬৮ হাজার ৮৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here