বলিউড স্টার সঞ্জয় দত্ত বৃহস্পতিবার যখন পুনের কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন, তখন তাঁর ঝুলিতে ছিল কাগজের ব্যাগ তৈরি আর রেডিও ডিস্ক জকি হিসাবে কাজের অভিজ্ঞতা। কারণ এখানে কাগজের ব্যাগ বা ঠোঙা তৈরি করে তিনি আয় করেছেন প্রতিদিন ৪৫ রূপি। কারাগারের রেডিওতে একজন উপস্থাপক হিসাবেও তিনি কাজ করেছেন। ১৯৯৩ সালের মুম্বাই বোমা হামলার ঘটনার পর, হামলাকারীর কাজ থেকে অবৈধ অস্ত্র কেনার অভিযোগে মুন্নাভাই সঞ্জয় দত্তের সাজা হয়। যদিও তার দাবি, হিন্দু মুসলিম দাঙ্গার কারণে নিজের পরিবারকে বাঁচাতেই তিনি ওই অস্ত্রটি কিনেছিলেন। তার পাঁচ বছরের সাজা হলেও, ভালো ব্যবহারের কারণে ১৪৪ দিনের সাজা কমে যায়।
২০১৩ সালে তাকে পুনের ওই কারাগারে তার কারাভোগ শেষ করার জন্য পাঠানো হয়। যদিও অনেকে দাবি, সেলিব্রিটি হওয়ার কারণে তিনি অনেক বেশি প্যারোল ভোগ করেছেন। বৃহস্পতিবার তিনি সেই সাজা ভোগ শেষে বেরিয়ে এলেন। কিন্তু কেমন ছিল তার কারাগারের দিনগুলো? কারাগারে সঞ্জয় দত্ত সবচেয়ে নিরাপত্তার ওয়ার্ড, ফ্যান্সি ওয়ার্ডে আট ফুট বাই দশ ফুটের একটি সেলে বাস করতেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সেলগুলো ছিল ঠিক পাশেই। তাকে কারাবন্দিদের পোশাকই তাকে পরতে হতো। তার কারাগারের বাইরে একটি ছোট বাগান ছিল, নিরাপত্তারক্ষীদের নজরবন্দি হয়ে সেখানে তিনি হাঁটাচলা করতে পারবেন।
একজন কারাবন্দি জানিয়েছেন, তাকে কারাগারে সবাই বাবা বলে ডাকতো। কারাগারে তিনি অনেক বই পড়তেন। লাইব্রেরি থেকে প্রতি সপ্তাহে তিনি দুইটি বই আনতেন। সকাল ৬টায় ঘুম থেকে ওঠার কিছু পর কারারক্ষীরা তার কাগজের ব্যাগ বানানোর জিনিসপত্র নিয়ে আসতো। নিউজ পেপার কেটে কেটে তিনি ব্যাগ বানাতেন। এতে প্রতিদিন তার আয় হতো ৪৫ রুপি। দুপুরে তাকে কারাগারের অভ্যন্তরীণ রেডিও কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হতো। সেখানে তিনি রেডিও জকি হিসাবে একটি প্রোগ্রাম উপস্থাপনা করতেন। দুপুরের খাবারের পরও তিনি রেডিওকে কাজ করতেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাতের খাবার খেয়ে ৮টার মধ্যে তাকে নিজের সেলে ঢুকে পড়তে হতো। পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত তিনি সেখানেই তালাবন্ধ থাকতেন।