ভূমি অধিগ্রগহণে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট সংক্ষুব্ধ পক্ষের আপিলসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিধান করে গতকাল সংসদে পায়রা বন্দর প্রকল্প (ভূমি অধিগ্রহণ) বিল ২০১৬ পাস করা হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন।
বিলে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কোন ভূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হলে তা জনস্বার্থে প্রয়োজন বলে গণ্য হবে এবং কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী উক্ত ভূমি অধিগ্রহণ করার বিধান করা হয়েছে।
বিলে ভূমি অধিগ্রহণের নোটিশ প্রদানের পর অধিগ্রহণাধীন ভূমির ওপর জনস্বাস্থ্য বিরোধী কোন ঘরবাড়ি বা স্থাপনার বা ভূমির শ্রেণী পরিবর্তনের জন্য কোন ব্যক্তি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী হবে না বলে বিধান করা হয়েছে।
বিলে বলা হয় ভূমি অধিগ্রহণ অধ্যাদেশের ধারা ৮-এর অধীন ক্ষতিপূরণ নির্ধারণকালে কমিশনার যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অধিগ্রহণাধীন কোন ভূমির ওপর নির্মিত বা নির্মাণাধীন কোন ঘরবাড়ি বা অন্য কোন প্রকার স্থাপনা জনস্বার্থ বিরোধী উদ্দেশ্যে নির্মাণ বা নির্মাণাধীন রয়েছে বা একই উদ্দেশ্যে কোন ঘরবাড়ি বা স্থাপনা বা ভূমির শ্রেণীর পরিবর্তন করা হয়েছে, তাহলে তিনি উক্তরূপ ঘরবাড়ি বা স্থাপনা বা পরিবর্তনকে উক্ত ধারা ৮-এর অধীন ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য বিবেচনা করবেন না এবং এইরূপ ক্ষতিপূরণের দাবি যদি থাকে, প্রত্যাখ্যান করা হবে।
বিলে উপ-ধারা (২)-এর অধীন দাবি প্রত্যাখানের কারণে সংক্ষুব্ধ কোন ব্যক্তি, প্রত্যাখ্যান আদেশ জারি হওয়ার ৭ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণের দাবিতে কমিশনারের নিকট উক্ত প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করার বিধান করা হয়েছে।
বিলে কমিশনার, উপ-ধারা (৩)-এর অধীন আপিল আবেদন প্রাপ্তির ৫ কর্মদিবসের মধ্যে আপিলের বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করবেন এবং অতঃপর আপিলকারীকে শুনানির সুযোগ প্রদানপূর্বক অনধিক ৫ কার্যদিবসের মধ্যে আপিলের বিষয়ে যথোপযুক্ত আদেশ প্রদান করার বিধান করা হয়েছে।
বিলে এই আইনের অধীন অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিপূরণ প্রত্যাশী সংস্থার নিকট থেকে অর্থ প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিপূরণ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ বা ওয়ার্ড কমিশনার বা কাউন্সিলর কার্যালয়ে ডেপুটি কমিশনার কর্তৃক পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী প্রকাশ্যে পরিশোধ করার বিধান করা হয়েছে।
বিলে বলা হয়, ভূমি অধিগ্রহণ অধ্যাদেশের ধারা ৩-এর অধীন নোটিশ জারির সময় সংশ্লিষ্ট ডেপুটি কমিশনার কর্তৃক অধিগ্রহণাধীন ভূমির যো ভিডিও চিত্র গ্রহণ ও সংরক্ষণ করা হয়েছে, উক্ত ভিডিও চিত্র এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে এই আইনের অধীন গৃহীত ও সংরক্ষিত হয়েছে বলে গণ্য হবে এবং উক্ত ভিডিও চিত্রের ভিত্তিতে উক্ত ভূমির ক্ষতিপূরণ পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণের বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া উপ-ধারা (৪)-এর অধীন প্রদত্ত কমিশনারের আদেশ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চূড়ান্ত হওয়ার বিধান করা হয়েছে।
বিলে বলা হয় উপ-ধারা (৪)-এর অধীন প্রদত্ত আদেশে যদি আপিল নামঞ্জুর করা হয়, তাহলে উক্তরূপ নামঞ্জুর আদেশ জারির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আপিলকারী সংশ্লিষ্ট ঘরবাড়ি বা স্থাপনা নিজ খরচ ও দায়িত্বে অপসারণ করবেন। অন্যথায় ডেপুটি কমিশনার উক্ত ঘরবাড়ি বা স্থাপনা প্রকাশ্যে নিলাম বিক্রয় করে বিক্রয়লব্ধ অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার বিধান করা হয়েছে।
বিলে উপ-ধারা (২)-এর অধীন ডেপুটি কমিশনার কর্তৃক ক্ষতিপূরণের দাবি প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে যদি দাবিদার উপ-ধারা (৩)-এর অধীন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপিল দায়ের না করেন, তাহলে উক্ত সময়ের পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি সংশ্লিষ্ট ঘরবাড়ি বা স্থাপনা অপসারণ করবেন, অন্যথায় ডেপুটি কমিশনার উপ-ধারা (৮)-এ উল্লেখিত ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান করা হয়েছে।
বিলে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অধিগ্রহণাধীন কোন ভূমির মাটি অসৎ উদ্দেশ্যে কাটিয়া বা অন্য কোন উপায়ে উক্ত ভূমির শ্রেণী পরিবর্তন করা হলে, উক্তরূপ পরিবর্তনের জন্য ভূমির কোন ক্ষতি হলে সরকার সংশ্লিষ্ট ভূমির মালিকের নিকট থেকে উক্ত ক্ষতি বাবদ যথাযথ পরিমাণ ক্ষতিপূরণ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে আদায় করার বিধান করা হয়েছে।
বিলে বলা হয়, এই আইনের অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ বা গৃহীত কোন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কোন আদালত কোন মামলা বা দরখাস্ত গ্রহণ করিবে না এবং এই ধারার অধীন বা এই ধারা হতে প্রাপ্ত ক্ষমতাবলে গৃহীত বা গৃহীতব্য কোন কার্যক্রম সম্পর্কে কোন আদালত কোন প্রকার নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারবে না।
এছাড়া বিলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা বিধি প্রণয়ন করার বিধান করা হয়েছে।
জাতীয পার্টির ফখরুল ইমাম, নরুল ইসলাম মিলন, মো. নুরুল ইসলাম, সেলিম উদ্দিন, বেগম রওশন আরা মান্নান স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী ও আব্দুল মতিন বিলের ওপর জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাব আনলে তা কন্ঠ ভোটে নাকচ হয়ে যায়।