পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে পুরোহিত হত্যার ঘটনায় মূলহোতাকে চিহ্নিত ও পুরো হত্যা রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি করেছে পুলিশ।
আজ (শুক্রবার) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দেবীগঞ্জ থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হুমায়ুন কবির এ দাবি করেন। তিনি জানান, পুরোহিত হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে পঞ্চগড় ও নীলফামারীতে অভিযান চালিয়ে আরও ৩ জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন সরাসরি ওই হত্যায় অংশ নেয়। তদন্তের স্বার্থে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের নাম জানায়নি পুলিশ।
ডিআইজি হুমায়ুন বলেন, তাঁরা হত্যাকাণ্ডের পুরো রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছেন। হত্যাকাণ্ডে মোট আটজন জড়িত ছিলেন। এ পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য দুজনকেও শিগগিরই ধরা হবে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি পিস্তল, পাঁচটি গুলি, তিনটি ম্যাগাজিন, তিনটি ছুরি ও তিনটি ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি হুমায়ূন কবির বলেন, ‘আইনশৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির জন্যই এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। ইতিমধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছি, হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাকেও আমরা চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যেই বাকি আসামিদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।’
গত রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় হিন্দু মঠের অধ্যক্ষ যজ্ঞেশ্বর রায়কে (৫০) গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। গুলিবিদ্ধ হন মঠের একজন সাধু। ওই দিন রাতে ওই এলাকায় নিজ নিজ বাড়ি থেকে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির দুই সদস্য খলিলুর রহমান ও বাবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জাহাঙ্গীর আলম (৩০) নামে ছাত্রশিবিরের আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের পর তাকফিরি সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আইএসআইএল দায় স্বীকার করে বলে দাবি করেছে জঙ্গিগোষ্ঠীর ইন্টারনেটভিত্তিক তৎপরতা নজরদারিতে যুক্ত মার্কিন সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ। সাইটের প্রধান রিটা কাৎজ এক টুইটার বার্তায় এ কথা জানান। তবে, আইএসআইএলের এই দায় স্বীকারের বিষয়টিকে নাকচ করে দেয় পুলিশ।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় দুই বিদেশি নাগরিক হত্যা, একাধিক খ্রিষ্টান পাদরিকে হত্যার চেষ্টা এবং শিয়া মুসলমান ও কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের উপাসনালয়ে বোমা হামলাসহ নয়টি ঘটনায় আইএসআইএল দায় স্বীকার করেছিল, যা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এসেছিল। তবে শুরু থেকেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এসব দাবি জোরালোভাবে নাকচ করে বলা হয়েছে, এ দেশে আইএসআইএলের কোনো অস্তিত্ব নেই।