ঐতিহাসিক ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাঙালি জাতির স্বাধীনতার দলিল : রাষ্ট্রপতি

0
423

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালি জাতির স্বাধীনতার দলিল ।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আজ এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ৭ মার্চ ১৯৭১ বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় দিন। এ দিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বজ্রকণ্ঠে যে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন তার মধ্যে নিহিত ছিল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের ডাক।
তিনি এ দিনে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যাঁর অনন্য সাধারণ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে মিশে আছে জাতির পিতার অসামান্য অবদান। মহান ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জনের এই দীর্ঘ বন্ধুর পথে বঙ্গবন্ধুর অপরিসীম সাহস, সীমাহীন ত্যাগ-তিতিক্ষা, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং সঠিক দিকনির্দেশনা জাতিকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে অসীম সাহসিকতার সাথে রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উদ্দেশ্যে বজ্রকণ্ঠে যে ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন তা মূলত বাঙালি জাতির স্বাধীনতার দলিল। কালজয়ী এই ভাষণ ছিল বাংলাদেশের ভিত্তিমূল। দৃঢ় মনোবল, অনন্য বাগ্মিতা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় ভাস্বর ওই ভাষণে তিনি তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বাঙালির আবেগ, স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষাকে একসূত্রে গেঁথে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করলেন বাঙালির মুক্তির সনদ, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’, যা ছিল মূলত স্বাধীনতার ডাক।
রাষ্ট্রপতি বলেন, এই ভাষণের পর সারাবাংলার মুক্তিপাগল উদ্বেলিত জনগণ মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করে। ঐতিহাসিক ভাষণের সেই ধারাবাহিকতায় ২৬ মার্চ ১৯৭১ জাতির পিতা ঘোষণা করেন বাঙালি জাতির বহু কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ ন’মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জাতি অর্জন করে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। দেশের স্বাধীনতা অর্জনে তাই ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’য় পরিণত করা ছিল বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন। মহান নেতার সে স্বপ্ন পূরণ করতে সমাজ থেকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অশিক্ষাসহ নানা সামাজিক কুসংস্কার দূরীকরণে আমাদের অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে সকল রাজনৈতিক দলসহ সর্বস্তরের জনগণের অব্যাহত প্রচেষ্টা থাকতে হবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশকে একটি মধ্যমআয়ের এবং ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘রূপকল্প-২০২১’ ও ‘রূপকল্প-২০৪১’ ঘোষণা করেছেন। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে রাষ্ট্রপতি দলমতনির্বিশেষে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান ।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ জাতির প্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবে বলে তার দৃঢ় বিশ্বাস।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here