বরিশাল বাস মালিক সদস্য ও মক্কা পরিবহনের মালিক নারী লিপ্সু মামুনের লালসার শিকার স্কুল ছাত্রীসহ ১২নারী

0
341

আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি :

বরিশাল বাস মালিক সমিতির সদস্য ও “মক্কা” পরিবহনের মালিক নারী লিপ্সু মামুন খানের শিকার হল আগৈলঝাড়ার নবম শ্রেনি পড়–য়া স্কুল ছাত্রী ববিতা। ৪মার্চ ববিতা অপহরণের অভিযোগে আগৈলঝাড়া থানায় তার মা অভিযোগ দায়ের করেছেন। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে নারী লিপ্সু মামুনের নারী শিকার ও তাদের বিতারণের অভিনব চাঞ্চল্যকর তথ্য। তবে প্রভাব আর টাকার কারণে বারবার অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে মামুন খান।
কৌশলে স্কুল-কলেজ পড়–য়া ছাত্রীদের অপহরণ করে ও প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের নামে প্রহসন করে কয়েকদিন ফুর্তি করে শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। এরপর তাড়িয়ে দেয়া হয় সেই নারীকে। এভাবে লম্পট মামুন কর্তৃক ১১জন নারীর সর্বনাশের খবর পাওয়া গেছে।
প্রতারক ও লম্পট মামুনের ঘনিষ্ট স্বজনসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গৌরনদী পৌর এলাকার কাশেমাবাদ (বর্তমান দক্ষিণ বিজয়পুর) মহল্লার বাসিন্দা জালাল খানের ছেলে মামুন খান (৩৬)। দীর্ঘদিন ছিলেন সৌদি আরব প্রবাসে ।
১৫ বছর পূর্বে সৌদি আরবে বসবাস করার সময় কৌশলে সেখানে বসবাসরত মিশরীয় দুই মেয়েকে একে অপরের অজান্তে বিয়ে করে মামুন। ওই দুই মিশরীয় নারীর গর্ভে তার দুটি সন্তান জন্ম নেয়। উভয় স্ত্রী মামুনরে বিয়ের কথা জানার পর তারা আইনের আশ্রয় নিলে প্রাণভয়ে মামুন সৌদি আরব থেকে পালিয়ে দেশে আসে।
দেশে ফিরেই লম্পট মামুন কৌশলে গৌরনদীর লেবুতলী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন খন্দকারের নাবালিকা মেয়ে সোহাগী আক্তারকে বিয়ে করে। বিয়ের কয়েকদিন যেতে না যেতেই সোহাগীকে অমানুষিক নির্যাতন করে তাড়িয়ে দেয় মামুন।
পরবর্তীতে কাশেমাবাদ গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে মরিয়মকে বিয়ে করে মামুন। মরিয়মের গর্ভে এক কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ার পরই নির্যাতনের এক পর্যায়ে তাকেও তাড়িয়ে দেয়া হয়।
পরবর্তীতে বরিশাল নগরীর বিএম কলেজের সামনের একটি বিউটি পার্লরের কর্মী লাবনী আক্তারকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে মামুন। বিয়ের কয়েকদিন পর এক লাখ টাকা লাবনীকে ধরিয়ে দিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে তাকেও তাড়িয়ে দেয়া হয়।
পরে উজিরপুরের হাবিবপুর গ্রামের মনি আক্তার নামের এক যুবতীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রহসনের বিয়ে করে নারী লিপ্সু মামুন। মনির গর্ভে মামুনের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। পরবর্তীতে তাতে তাড়িয়ে দিতে অমানুষিক নির্যাতন করায় আদালতের শরনাপন্ন হয় হয় মনি। যা এখনও বিচারাধীন রয়েছে। ওই মামলায় পুলিশ মামুন ও তার মা নাছিমা বেগমকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন ।
দীর্ঘদিন কারাভোগের পর জামিনে বেরিয়ে নারীলোভী মামুন বিমানবন্দর থানা এলাকার দুই স্কুল ছাত্রীকে এক মাসের ব্যবধানে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রহসনের বিয়ে করে। একই এলাকার দুই মেয়েকে বিয়ের তথ্য ফাঁস হওয়ায় উভয় স্ত্রী থানা পুলিশের আশ্রয় নেয়। পুলিশ মামুনকে আটক করলেও বরিশাল জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতির মধ্যস্থতায় ৫লাখ টাকার বিনিময়ে উভয় ছাত্রীর সাথে নিস্পতি করে দেয়া হয়। এছাড়াও মামুন নিজেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক পরিচয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে আগৈলঝাড়ার ঘোড়ারপার গ্রামের অস্টম শ্রেনির ছাত্রী রতœা মন্ডলকে নিয়ে চম্পট দেয়। এ ঘটনার পরে মামুনের পরিবারের উপর ওই ছাত্রীর পরিবার চাপ সৃষ্ঠি করলে বাধ্য হয়ে রতœা মন্ডলকে পরিবারের কাছে ফেরত দেয় মামুন। ওইসময় আগৈলঝাড়ার প্রভাবশালী একটি মহলকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে মামলা থেকে রেহাই দেয় নারী লোভী মামুনকে। এভাবেই দেশের বিভিন্নস্থানের স্কুল-কলেজ পড়–য়া অন্তত ১১জন মেয়েকে কৌশলে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের পর কয়েকদিন ভোগ করে নির্যাতন করে তাড়িয়ে দেয়াই হচ্ছে মামুনের নেশা।
সর্বশেষ নারীলিপ্সু মামুনের লালসার শিকার হয়েছে আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার গ্রামের দুবাই প্রবাসী মোস্তফা আকনের মেয়ে ও রাজিহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী ববিতা আক্তার (১৪)। ৩মার্চ বৈার রাতে অযু করতে গেলে মামুন ববিতাকে অপহরন করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ববিতার মা বিলকিস বেগম বাদি হয়ে মামুন খানসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তবে খোজ নিয়ে জানা গেছে ওই অভিযোগ এখন পর্যন্ত থানায় রেকর্ড হয়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here