মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে নিয়ে দুই মন্ত্রীর বক্তব্য সরকারের নয়। তবে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিদ্বয়ের নাম উল্লেখ করেননি। যে দুই মন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেছেন, এ সময় ওই দুই মন্ত্রীই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, একটি সংগঠনের অনুষ্ঠানে গিয়ে দুজন মন্ত্রী যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন, এতে মনে হয় যেন ওই সংগঠনটি সরকারের কোনো সংগঠন এবং এই বক্তব্য যেন সরকারের বক্তব্য। তিনি বৈঠকে স্পষ্ট করেন, মন্ত্রীদের এ ধরনের বক্তব্যে তিনি বিব্রত হয়েছেন, তাঁর সরকারও বিব্রত। নির্ধারিত আলোচ্যসূচি শেষে দুই মন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই আলোচনায় তিনি কারও নাম উল্লেখ করেননি। এর আগে গত শনিবার ধানমণ্ডির বিলিয়া মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় খাদ্যমন্ত্রী বলেন, জামায়াত যে অভিযোগ করেছে, বিএনপি যে অভিযোগ করেছে, তাদের আন্তর্জাতিক লবিস্ট গ্রুপ যে সুরে কথা বলছে, একই সুরে কথা বলেছেন প্রধান বিচারপতি। প্রকারান্তরে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন তিনি। শুধু তাই নয়, এই বক্তব্য ট্রাইব্যুনালের পাঁচ বছরের বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ ও হত্যা করা হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে রবিবার অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম প্রধান বিচারপতি ও বিচারব্যবস্থা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি কোনো ব্যক্তি নন, একটি প্রতিষ্ঠান। প্রধান বিচারপতিকে বিতর্কিত করা মানে বিচারব্যবস্থাকে বিতর্কিত করা। তাই প্রধান বিচারপতি ও বিচারালয় নিয়ে বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকতে সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এদিন সুপ্রিম কোর্ট বার আয়োজিত প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে দুই মন্ত্রীর বক্তব্যর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, প্রধান বিচারপতি ও মীর কাসেম আলীর রায় নিয়ে সরকারের দুই মন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন তাতে সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই দেখার বিষয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি কেউ এ ধরনের বক্তব্য দিতে চান, তাহলে রাস্তায় গিয়ে দেন। মন্ত্রিসভার সদস্য হয়ে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পেলেই যা খুশি বলবেন এবং যেকোনো সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কথা বলছেন, এটা ঠিক নয়।