নড়াইলে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী

0
1112

অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ী এবার নড়াইল সদর উপজেলার ভদ্রবিলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। অবৈধ ভিওআইপির টাকায় ইউনিয়ন, থানা ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের ম্যানেজ করে এখন শীর্ষ নেতাদের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। কোটি টাকার বিনিময়ে এ ভিওআইপি ব্যবসায়ী মনোনয়ন নেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আলোচিত-সমালোচিত এ ভিওআইপি ব্যবসায়ীর নাম সৈয়দ আবিদুল ইসলাম আবিদ। নড়াইল সদর থানার পাইকড়া গ্রামের মৃত সৈয়দ আকবর আলীর পুত্র। বর্তমানে তিনি গুলশান-১ নম্বরে ৭নং রোডের ১৩ নম্বর বাসায় (সিদ্দিকী টাওয়ার) বসবাস করেন।
আলোচিত এ ভিওআইপি ব্যবসায়ী প্রথম জীবনে টেলিফোন লাইনের নিচের খাম্বার অংশ বিশেষ চুরি করে জীবিকা নির্বাহ করত। শিক্ষা জীবনের শুরুতে জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্র সমাজের নেতা ছিলেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে নড়াইল-১ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মেজর (অব.) আশরাফুল আলমের পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা করেন। এর পর থেকে নড়াইলে টেলিফোন লাইনের ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তীতে ঢাকায় এসে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বিএনপির ছত্রছায়ায় ভিওআইপি ব্যবসা করেন। ২০০৮ সালের ১ জুলাই ২০ কোটি টাকার অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামসহ তিনি র‌্যাব-১-এর হাতে গুলশান এলাকায় ধরা পড়েন। এ সময় তার পার্টনার জিয়াউর রহমান ধরা পড়ে। এই অভিযানে র‌্যাব-১-এর ক্যাপ্টেন শরীফ ও লে. মইন নেতৃত্ব দেন। এ ব্যাপারে গুলশান-১ ও মোহাম্মদপুর থানায় পৃথক মামলা করা হয়। ২০০৮ সালে ২ জুলাই দৈনিক ইত্তেফাক ও দৈনিক ইনকিলাবে অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদিসহ তার ছবি প্রকাশিত হয়। জাতীয় নির্বাচনে তিনি ভোল পাল্টে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। স্বতন্ত্র সাংসদ কবিরুল হক মুক্তির পক্ষে নির্বাচন করেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে পরাজিত করে মুক্তি এমপি নির্বাচিত হন। পরে মুক্তির ক্ষমতা ব্যবহার করে নিজের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেন। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আবিদন ভদ্রবিলা ইউনিয়ন থেকে নির্বাচন করে পরাজিত হন। ২০১৪ সালে নড়াইল উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মনিরুল ইসলামকে অর্থ সহায়তা দিয়ে জয়ী করেন। তার অর্থের দাপটের কাছে হেরে যান আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নিজাম উদ্দীন খান নিলু। এই নিলু জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এই সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র বোসের দ্বন্দ্ব রয়েছে। অর্থের বিনিময়ে আবিদ সহজেই সুভাষ বোসকে ম্যানেজ করেছেন। এছাড়া সদর থানা সভাপতি অ্যাডভোকেট অচীন কুমার বিশ্বাসকেও অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করেছেন বলে জানা গেছে। অর্থাৎ জেলা ও সদর থানা আওয়ামী লীগ সভাপতিকে অর্থের বিনিময়ে বশ করে জেলা সাধারণ সম্পাদককে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে তিনি দলীয় মনোনয়নসহ পাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে আবিদ ভিওআইপি ব্যবসার অর্থের বিনময়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে বশে আনার পায়তারা করছেন। এতে দলের নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। ভিওআইপি ব্যবসায়ী মনোনয়ন পেলে আওয়ামী লীগ বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। তাছাড়া সংঘর্ষ বাধারও সম্ভাবনা রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here