মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর চূড়ান্ত রায়কে কেন্দ্র করে প্রধান বিচারপতি ও বিচার বিভাগ নিয়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বক্তব্যে আদালত স্তম্ভিত। প্রধান বিচারপতি ও বিচার বিভাগ নিয়ে দুই মন্ত্রীর বক্তব্যে পরিপ্রেক্ষিতে একাত্তরে গণহত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলীর আপিলের রায় ঘোষণার আগে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা। এসময় তার নেতৃত্বাধীন নয় সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এজলাসে উপস্থিত ছিলেন। পরে পাচ সদস্যের একটি আপিল বেঞ্চ মীর কাসেমে আপিলের রায় ঘোষণা করেন।
এই দুই মন্ত্রীর বক্তব্য বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ বলেও উল্লেখ করেন আদালত। আপিল বেঞ্চ বলেছেন, প্রধান বিচারপতি ও বিচার বিভাগ নিয়ে মন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মোজাম্মেল হকের বক্তব্যে আদালতের সম্মানের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। আদালতের কর্তৃত্ব ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। আগামী ১৪ মার্চ দুই মন্ত্রীকে তাদের বক্তব্যের লিখিত ব্যাখ্যা সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দিতে হবে। আর পরদিন ১৫ মার্চ তাদের সশরীরে সর্বোচ্চ আদালতে হাজির হয়ে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতেও বলা হয়েছে।
এর আগে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা মীর কাসেমের মামলার বিচারকাজে তদন্ত সংস্থার গাফিলতির কথা বলেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং তদন্ত সংস্থা যে গাফিলতি করেছে এজন্য তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত। প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্যের পর আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছিলেন, রাষ্ট্রপক্ষের গাফিলতি থাকলে খতিয়ে দেখা হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেমের আপিলের পুনঃশুনানি দাবি করেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।