বেনাপোল কাস্টম হাউস ৮ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৩০৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা

0
267

বেনাপোল প্রতিনিধি :

২০১৫-১৬ অর্থবছরে বেনাপোল কাস্টম হাউজে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ১৪৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এর মধ্যে অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ১৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আহরণ হয়েছে ১ হাজার ৭০৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। ফলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম আহরণ হয়েছে ৩০৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
বেনাপোল কাস্টম সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আহরণ হয়েছে ১৯০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আগস্টে ২৫২ কোটি ৪৯ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ২৪৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, আহরণ ২০৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। অক্টোবরে লক্ষ্যমাত্রা ২৪৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকার বিপরীতে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ২৩২ কোটি ২১ লাখ টাকা। নভেম্বরে রাজস্ব আহরণে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আহরণ হয়েছে ২১১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। ডিসেম্বর মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩৭ কোটি ৭৯ কোটি টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ২০১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। জানুয়ারি মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, আদায় হয়েছে ২০৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এবং গেল ফেব্রুয়ারি মাসের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সেখানে আদায় করা হয়েছে ২১১ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, রাজস্ব আহরণ বাড়াতে গিয়ে আমদানি করা সব পণ্যের শুল্কমূল্য কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি নানামুখী হয়রানির ফলে আমদানিকারকরা ব্যবসায়িক সুবিধার্থে বেনাপোল ছেড়ে পার্শ্ববর্তী মংলা, হিলি, সোনামসজিদ ও ভোমরা স্থলবন্দর ব্যবহার করছেন। ফলে বেনাপোল কাস্টমসে দেখা দিয়েছে রাজস্ব ঘাটতি।
জানা গেছে, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আগে প্রতিদিন ৫০০ ট্রাক পণ্য আমদানি হতো। বর্তমানে আমদানি হচ্ছে তার অর্ধেকের কম। গত ৬ মাসে আনুমানিক ১০ হাজার টন পণ্য কম আমদানি হয়েছে বলে কাস্টম সূত্রে জানা গেছে।
বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি কামাল হোসেন বলেন, কাস্টম কর্মকর্তাদের হয়রানির কারণে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি কমে গেছে। আগে প্রতিদিন আমরা প্রায় ৫০০ ট্রাক পণ্য পরিবহন করতাম। এখন তা কমে এসেছে ১০০ ট্রাকে। কাজ না থাকায় অফিসের স্টাফরা এখান থেকে চলে যাচ্ছেন।
যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি ও আমদানিকারক মিজানুর রহমান খান জানান, গত বছরের অস্থিতিশীলতার প্রভাব এখন থেকে গেছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থার সংকট রয়েছে। যেকারণে তারা আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। আবার মালামাল বিক্রি কমে যাবার কারণেও ব্যবসায়ীরা পন্য কম আনছেন।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টম বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন জানান, মূলত আমদানি কমে যাবার কারণে রাজস্ব আদায়ে প্রভাব পড়েছে। বেনাপোল কাস্টমস কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই আমদানি করা পণ্যের শুল্কায়ন মূল্য বৃদ্ধি এবং ইচ্ছামতো এইচএস কোড পরিবর্তন করছেন। যেকারণে আমদানিকারকরা অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছেন।
কাস্টমস কমিশনার এএফএম আব্দুল্লাহ খান বলেন, আগে এই বন্দর দিয়ে শুল্ক ফাঁকি দেয়া হতো। কিন্তু এখন সেই সুযোগ নেই। তাছাড়া উচ্চ শুল্কযুক্ত ১৩ হাজার মেট্রিক টন পন্য কম আমদানি হওয়ার কারণে রাজস্ব আহরন কমে গেছে। আশা করছি সামনের মাসগুলোতে এটি পূরণ হয়ে যাবে।#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here