এইডস সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা পরিবর্তনের প্রতি রাষ্ট্রপতির গুরুত্বারোপ

0
507

এইডস সম্পর্কে জনগণের প্রচলিত ধারণা পরিবর্তনের উপর গুরুত্বারোপ করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, জনগণকে সচেতন হতে হবে- এইডস কোন অভিশাপ নয়, বরং এটি একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য ইস্যু।
আজ ঢাকায় এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এইডস সংক্রান্ত ১২তম আন্তর্জাতিক কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘এইডস-এ আক্রান্ত বহু মানুষ সমাজে অবজ্ঞার শিকার, এটা আকাঙ্খিত নয়। আমাদেরকে জনগণের এই ধারণা পরিবর্তন আনতে হবে এবং এইডস সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের পরিধি আরও বাড়াতে হবে।’
যেসব এইচআইভি রোগি এখনও অন্তরালে রয়েছে তাদেরকে খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে আরও মনোযোগ দেওয়ার আহবান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, জনগণের মধ্যে এইডস ছড়ানোর ক্ষেত্রে যাতে তারা গুরুতর হুমকি হিসেবে বিবেচিত না হয়-সে জন্যে সংশ্লিষ্টদের খেয়াল রাখতে হবে।
‘এইচআইভি/এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রতি বৈষম্য, কালিমালেপন, সমাজচ্যুতি দূর করার এখনই সময়’, একথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এইডস সম্পর্কিত ভীতি ভিত্তিহীন, এইডস স্বামী বা স্ত্রীকে বিধবা/বিপতিœক করে, শিশুদেরকে এতিম করে অথবা এইডস আক্রান্তদের সন্তান ও স্বামী-স্ত্রীর জন্য জীবনযাপন চ্যালেঞ্জিং।
তিনি আরও বলেন, ‘তাদেরকে সমাজের এক প্রান্তে সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়। এটা খুবই মর্মান্তিক যে, এটি এমন এক সময় ঘটছে যখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উৎকর্ষের সীমা নতুন মাত্রায় উন্নীত হচ্ছে। গ্রহগ্রহান্তরে ভ্রমণ সহজ মনে হলেও, কিন্তু আমাদের নিজেদের দিকে তাকালে তা খুবই কঠিন মনে হয়।’
বাংলাদেশ সম্পর্কে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, খুব প্রাথমিক পর্যায়ে এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সামাজিক স্থিতিস্থাপকতা যে খুব গুরুতপূর্ণ তা আমাদের দেশ বুঝতে পেরেছে।
‘আমরা এইচআইভি’র বিস্তার প্রতিরোধে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি লাভ করেছি, কিন্তু আত্মতুষ্টির কোন জায়গা নেই’- একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোন সমাজই নিরাপদ নয় যতক্ষণ পর্যন্ত এর সকল সদস্য সাধারণ নিয়মাবলী মেনে চলে, যা আবশ্যিকভাবে জ্ঞান ভিত্তিক ও আচরন দ্বারা পরিচালিত।
তিনি বলেন, যে কেউ যদি পরিসংখ্যান দেখেন তাহলে দেখবেন বাংলাদেশ উচ্চমাত্রার ঝুঁকিপূর্ণ দেশ নয়। তিনি আরও বলেন, কিন্ত ‘ভাইরাল ট্রান্সমিশন’-এর জটিলতা বিবেচনায় বাংলাদেশ এইচআইভি বিস্তারের ঝুঁকিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে কেননা বাংলাদেশের বহু যুবক প্রতিবছর চাকরির জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যায়।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘অতএব, বাংলাদেশের নাগরিকদের আমরা এইচআইভি’র শিকার হতে দিতে পারি না। শুধু বাংলাদেশি নয় সমগ্র মানবজাতি অন্যদেরকে বাদ রেখে বাঁচতে চায় না। সবাইকে গুরুত্ব দিতে হবে।’
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং ‘পার্টনারস ইন পপুলেশন এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ (পিপিডি) যৌথভাবে এ কংগ্রেসের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহেদ মালেক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, পিপিডি-এর নির্বাহি পরিচালক ও আইসিএএপি-এর মহাসচিব জো টমাস।
উল্লেখ্য, তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনে ৫৬টি দেশের প্রায় এক হাজার প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here