সুইফট মেসেজিং সিস্টেমে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৮০০ কোটি টাকা ফিলিপাইনের একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে সরিয়ে ফেলার ঘটনায়- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এ দাবি জানান। রিজভী বলেন, অবিলম্বে চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধার ও এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি। একই সাথে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং গভর্নর ড. আতিউর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেথ হাসিনার পদত্যাগও দাবি করছি। তিনি বলেন, জনগণের টাকা হ্যাকিংয়ের নামে চুরি হচ্ছে, পাচার হয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ৮০০ কোটি টাকা হ্যাক করার কথা তিনি কিছু জানেন না। যে সরকার গৃহস্থের বদলে চোরকে নিরাপদ রাখতে বেশি ব্যস্ত থাকে তারা তো কিছুই জানবে না। এ অবস্থায় অর্থপাচারের প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। এখন সেই প্রবণতা ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। ভোটারবিহীন কলঙ্কজনক নির্বাচনে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রীর কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্যে পুরো জাতি স্তম্ভিত। রিজার্ভের অর্থ কারো পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ নয়। আমাদের রক্ত-পানি করা প্রবাসী শ্রমিকদের কষ্টার্জিত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিজার্ভ হিসেবে সংরক্ষিত হয়। এ ঘটনাটি ঘটার প্রায় এক মাস পর কেন এটি প্রকাশ হলো? এতে সুস্পষ্টভাবেই বোঝা যায়- ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অপপ্রয়াস চলছিল, যোগ করেন তিনি। রিজভী বলেন, গণতন্ত্রহীণ দেশের একটি ভোটারবিহীন স্বৈরাচারী সরকারের বৈশিষ্ট্য- সর্বক্ষেত্রে অপশাসন ও প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলার অভাব, যার পরিণতি হচ্ছে বর্তমানের আর্থিক সেক্টরে বিরামহীন হরিলুট। এতে ক্ষমতাসীন মহলের বড় বড় রুই কাতলারা যে জড়িত তা সুষ্পষ্ট। জাতি জানতে চায়- এই দুর্নীতির শেষ কোথায়? যেহেতু বর্তমান সরকার পুরানো বাকশালের প্রেতাত্মা তাই বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ির দিকে আবারো এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে অঘোষিত আর্থিক অবরোধের কারণে দেশের রপ্তানি খাত ধ্বংস হতে বসেছে। দেশে বিনিয়োগ প্রায় শূন্যের কোঠায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিতে পুরো জাতি এখন নিরাপত্তাহীন। বিদেশিরাও এখন আমাদের দেশে নিরাপদ নয়, বিনিয়োগ থেকে শুরু করে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের ওপরও রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।