‘শেষ তিনটি বল’, ‘শেষ তিনটি বল’-ম্যাচ শেষে মাশরাফি বিন মুর্তজার কণ্ঠে এই তিনটি শব্দ আক্ষেপ হয়ে ঝরল। দুটি রানই দরকার ছিল। কিন্তু সেটি নিতে গিয়েও কেমন ভজকট পাকিয়ে ফেললেন মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকরা। পুরো ম্যাচে আধিপত্য ধরে রেখেও, ভারতের চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলেও শেষ দিকে এসে সব গুলিয়ে গেল।
শুধু শেষ তিন বলই নয়, শেষ কয়েকটা ওভারেই ভারতের বোলাররা যেমন দুর্দান্ত বোলিং করেছেন, তেমনি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাও ভুগেছেন পরিকল্পনাহীনতায়। একটা সময় ২৪ বলে ৩৪ থেকে লক্ষ্যটা শেষ কয়েক ওভারে এসে আস্তে আস্তে দূরে সরে গেল বাংলাদেশের কাছ থেকে। জসপ্রিত বুমরার উনিশতম ওভারে ছয় রান অনেক বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। যে কারণে শেষ ছয় বলে বাংলাদেশের দরকার হয়ে পড়ল ১১ রান।
তা-ও একটু আশার ব্যাপার ছিল, ওই সময় হার্দিক পান্ডিয়া ছাড়া আর কোনো স্ট্রাইক বোলার ছিল না ভারতের। আর যা-ই হোক, পান্ডিয়া তো আর নেহরা-অশ্বিনের মতো ভয়ংকর নন। এ কারণেই কিনা পান্ডিয়ার ওভারটির আগে মোটামুটি এগারো সদস্যের একটা টিম-মিটিং করল ভারত। পরিকল্পনাও করল অনেক। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায়ই হোক, আর নিজের কৃতিত্বে-ম্যাচের শেষ বেলার নায়ক পান্ডিয়া।
কিন্তু পান্ডিয়াকে কী এমন বলেছিলেন ধোনি? কী নিয়ে অত সময় নিয়ে পরিকল্পনা করলেন? ম্যাচ শেষে প্রশ্নটার জবাবে ভারত অধিনায়ক বললেন, ‘কয়েকটা বিষয় নিয়েই আলোচনা করেছি। একটা বিষয় ছিল-নিশ্চিত করা যেন ইয়র্কার না হয়। ব্যাক অব দ্য লেংথ ডেলিভারি করতে বলেছিলাম। কিন্তু কতটা ব্যাক অব দ্য লেংথ, এটাই ছিল প্রশ্ন। আপনি নিশ্চয়ই ওই সময়ে খুব বেশি বাইরে বল করতে চাইবেন না, যাতে উইকেটকিপারের কাছে যাওয়ার আগের সময়টুকুর মধ্যেই ব্যাটসম্যানরা এক রান না নিতে পারেন। ফিল্ডিং কী হবে, কোন লেংথ বল হবে এগুলোও ছিল আলোচনায়।’
তবে পরিকল্পনা করে দিলেও দিনশেষে কাজটা তো পান্ডিয়াকেই করতে হয়েছে। মুশফিক দুটি চার মেরে পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয়টা পান্ডিয়ার। তরুণ বোলারের প্রশংসাও তাই ঝরল ধোনির কণ্ঠে, ‘আসলে কী, আপনি একশটা জিনিস পরিকল্পনা করতে পারেন, কিন্তু এর বাস্তবায়নও তো লাগে। ও (পান্ডিয়া) এই কাজটা বেশ ভালোভাবেই করেছে। শেষ বলগুলো যেভাবে করেছে, এক কথায় অসাধারণ।’
ম্যাচটাও এমনই অসাধারণ হয়েছে, তবে তীরে এসে তরি ডোবায় আক্ষেপটা শুধুই বাংলাদেশেরই।