বরিশাল প্রতিনিধি ॥ স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের পুরো ঘটনা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে জেলার উজিরপুর উপজেলায়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন নারায়ণপুর পল্লী ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসহ শত শত শিক্ষার্থীরা। অবশেষে ওইদিন রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধর্ষক সুমন তালুকদারকে গ্রেফতার করেছে।
এজাহারে জানা গেছে, গুঠিয়া ইউনিয়নের নারায়ণপুর স্কুলের নবম শ্রেণীর ওই ছাত্রী গত ১৭মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে বেলা বারোটার দিকে চাগুরিয়া বড়বাড়ির জনৈক মোহাম্মদ হাওলাদারের স্ত্রী আলেয়া ওরফে ফুরফুরি বেগম তার মোবাইলের মেসেজ মুছানোর কথা বলে স্কুল ছাত্রীকে ঘরে ডেকে নেয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘরে প্রবেশ করে একই গ্রামের লতিফ তালুকদারের পুত্র ও এলাকার চিহ্নিত বখাটে যুবক সুমন তালুকদার (৩৫)। সে স্কুল ছাত্রী চাকু দেখিয়ে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে। এ ধর্ষণের পুরো চিত্র আলেয়া বেগম মোবাইলে ধারণ করে। পরে সুমন কাউকে না বলার জন্য ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রীকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাড়িয়ে দেয়। বাড়িতে ফিরে ধর্ষিতা তার নানিকে বিষয়টি অবহিত করে। পরবর্তীতে তার (স্কুল ছাত্রীর) পিতা ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করার কারণে মোবাইল ফোনে বিষয়টি তাকেও অবহিত করা হয়। পরেরদিন ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রীর পিতা বাড়িতে ফিরে বিষয়টি শিক্ষকদের জানানোর জন্য তার মেয়েকে নিয়ে স্কুলে রওনা হন। পথিমধ্যে ধর্ষক সুমন তালুকদার তাদের পথরোধ করে বিষয়টি কাউকে জানালে ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়।
বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। বৃহস্পতিবার দুপুরে শত শত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ধর্ষক সুমনকে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। পরবর্তীতে নির্বাহী অফিসার ঝুমুর বালার নির্দেশে পুলিশ ওইদিন রাতেই অভিযান চালিয়ে ধর্ষক সুমন তালুকদারকে গ্রেফতার করে।
উজিরপুর মডেল থানার ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম পিপিএম জানান, এ ঘটনায় স্কুল ছাত্রী বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। এছাড়া শুক্রবার সকালে চাগুরিয়া গ্রামের অপর এক গৃহবধূ বাদি হয়ে সুমনের বিরুদ্ধে আরও একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে। উভয় মামলায় শুক্রবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত সুমনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।