মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ আবেদনের শুনানিতে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। নিজামীর করা সময়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ রবিবার সকালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এক সপ্তাহ সময় আবেদন মঞ্জুর করেন। বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। আদালতের নিজামীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এসএম শাহজাহান। মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনার জন্য ২৯ মার্চ আবেদন করেন একাত্তরের বদর প্রধান নিজামী। নিজামীর রিভিউ দ্রুত শুনানির জন্য রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে ৩০ মার্চ চেম্বার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার বিষয়টি ৩ এপ্রিল আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন। সেদিন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল বলেন, ৩ এপ্রিল বিষয়টি নিয়মিত বেঞ্চের কার্যতালিকায় আসবে। রিভিউ আবেদন দায়েরর পর নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজীব মোমেন জানান, ৭০ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে তারা মোট ৪৬টি যুক্তি তুলে ধরে সব দণ্ড থেকে খালাস চেয়েছেন। নিজামীর রিভিউ না টিকলে রাষ্ট্রপতির কাছে তিনি প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। দুই আর্জিই নাকচ হলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে কারা কর্তৃপক্ষ দণ্ড কার্যকরের ব্যবস্থা নেবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাবনায় হত্যা, ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবী গণহত্যার দায়ে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর নিজামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। চলতি বছর ৬ জানুয়ারি আপিল আংশিক মঞ্জুর করে সেই ফাঁসির রায়ই বহাল রাখে সর্বোচ্চ আদালত। জামায়াত আমির নিজামী একাত্তরে ছিলেন দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নাজিমে আলা বা সভাপতি এবং সেই সূত্রে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত আল-বদর বাহিনীর প্রধান। স্বাধীনতাকামী বাঙালির ওপর দমন-পীড়ন চালাতে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত রাজাকার বাহিনী ও শান্তি কমিটিতেও তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে এই মামলার বিচারে উঠে আসে।