বরিশালে দারোগার বিরুদ্ধে বিচারকের মামলা দায়ের

0
201

বরিশাল প্রতিনিধি ॥ আসামি পক্ষের হয়ে আদালতে মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগে জেলার মুলাদী থানার একটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তরুন বাছাড়। মামলায় অভিযুক্ত এস.আই’র বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ১৭৭ ধারায় (পেনাল কোড) অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।
সোমবার সকালে বরিশাল চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোঃ শওকত হোসেন জানান, মুলাদী থানার এস.আই নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে রবিবার বিকেলে একই আদালতে মামলাটি (সিআর মামলা নং-৭১/১৬) দায়ের করা হয়েছে। এসময় চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক অমিত কুমার দে মামলাটি আমলে নিয়ে অভিযোগটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রফিকুল ইসলামকে নির্দেশ দিয়েছেন।
বিচারকের বাদি হয়ে দায়ের করা মামলার অভিযোগে জানা গেছে, মুলাদী থানার একটি মামলার (জিআর মামলা নং ১৫৩/১৫) তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এস.আই মোঃ নাসির উদ্দিন। ওই মামলায় বাদি ও আসামিদের মধ্যে স্থানীয়ভাবে কোন আপোস-মীমাংসা না হওয়ার পরও দুই পক্ষের আপোস-মীমাংসা হয়ে গেছে উল্লেখ করে তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে মামলাটির চূড়ান্ত (ফাইনাল) প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই মামলার বাদি চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে গত ২৭মার্চ আদালতে নারাজী আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে ওইদিনই আদালত তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে নারাজী আবেদনসহ চূড়ান্ত প্রতিবেদনের উপর শুনানীর পরবর্তী তারিখ ধার্য্য (৩ এপ্রিল) করেন। তদন্ত কর্মকর্তাকে পরবর্তী ধার্য্য তারিখে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য আদালতের জিআরও শাখা থেকে ওইদিনই ১২৮৫ নম্বর স্মারক মূলে মুলাদী থানার এসআই মোঃ নাসির উদ্দিনের কাছে সমন পাঠানো হয়। জিআরও শাখা এস.আই নাসির উদ্দিনের সমন পাওয়ার বিষয়টি আদালতকে নিশ্চিত করেন। কিন্তু রবিবার পূর্ব নির্ধারিত তারিখে ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অনুপস্থিত থাকেন। ফলে আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পেনাল কোডের ১৭৭ ধারা মোতাবেক অপরাধ করায় বিচারক তরুন বাছাড় চীফ মেট্রোপলিটন আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই মোঃ নাসিউদ্দিনের (বিপি নং-৭৭৯৮০২৫৮৭১) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
অনুসন্ধানে মামলার ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, মুলাদীর দড়িরচর গ্রামের মোঃ কাওছার আলম অলি, তার বৃদ্ধা মা হোসনেআরা বেগম এবং বোন সোহেলী আক্তার উত্তরাধীকার সূত্রে পাওয়া জমি ভোগ দখল করে আসছিলেন। একই গ্রামের মাসুম হাওলাদার, গোলাম মাওলা, মোশারেফ হাওলাদার, মনিরুল ইসলাম মিন্টু হাওলাদারসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন ব্যক্তি বিভিন্ন সময়ে অলির জমিতে থাকা ফসলাদি জোরপূর্বক লুট করে নেয়। গত বছরের ৫ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অলি বাজারের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে উল্লেখিত ব্যক্তিরা তার পথরোধ করে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এসময় চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে (অলি) মারধর করে সাথে থাকা নগদ ৩ হাজার ৫’শ টাকা এবং ৪ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার সময় প্রান বাঁচাতে অলি দৌঁড়ে তার বসত ঘরে প্রবেশ করলে চাঁদাবাজরা ঘরে ঢুকে অলি, তার বৃদ্ধা মাকে মারধর করে জখমসহ বোনকে শ্লীলতাহানী করে। এ ঘটনায় অলি বাদী হয়ে ওই বছরের ৩ ডিসেম্বর বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে মুলাদী থানার এস.আই নাছির উদ্দিনের ব্যবহৃত মোবাইল (০১৭৪০-৫৫৩৩৮৮) নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here