সারা বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টিকারী ‘পানামা পেপারস’ কেলেংকারির ঘটনায় আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর পর এবার পদত্যাগ করলেন চিলির ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) প্রধান গনজালো দেলাভিউ। উল্লেখ্য, ‘পানামা পেপারস’ কেলেঙ্কারিকে বলা হচ্ছে ‘ক্রাইম অব দি সেঞ্চুরি’। গোপনীয়তা রক্ষাকারী হিসেবে স্বীকৃত পৃথিবীর অন্যতম প্রতিষ্ঠান মোস্যাক ফনসেকা যেটি পানামার একটি আইনি প্রতিষ্ঠান, সেখান থেকেই সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে এক কোটি ১৫ লাখ নথিপত্র। যেখানে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অর্থপাচারের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য রয়েছে। যেখানে বিশ্বের ধনাঢ্য ও ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের গোপন সম্পদের তথ্য, আর কীভাবে আইনি প্রতিষ্ঠানটি এসব ব্যক্তির অর্থপাচার, নিষেধাজ্ঞা এড়ানো এবং কর ফাঁকিতে সহযোগিতা করেছে, তার চিত্র। ওই নথিপত্রগুলোকেই বলা হচ্ছে পানামা পেপারস। জার্মানির একটি পত্রিকার সূত্রে এসব নথি প্রকাশ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট। এদিকে, ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস করার পর নড়েচড়ে উঠেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। এরই মধ্যে কয়েকটি দেশ এসব ঘটনার তদন্ত করার ঘোষণা দিয়েছে। তালিকায় নাম থাকা আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিগমুন্ডুর ডেভিড গুনলাগসনের পদত্যাগের দাবিতে সোমবার রাজধানী রেইকজাভিকের রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করে। পদত্যাগ করতে বাধ্য হন আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। আর তারই ধারাবাহিকতায় এবার পদ হারালেন টিঅাই প্রধান গনজালো দেলাভিউ। পদত্যাগের পর এডিএন রেডিওকে দেলাভিউ বলেছেন, “মোসাক ফনসেকার এই ‘অন্ধকার দিক’ দেখে আমি যারপরনাই বিস্মিত। কিন্তু আমি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের সুখ্যাতি নষ্ট করতে চাই না।’ দেলাভিউ আরও দাবি করেন, তিনি কোনো অবৈধ পন্থায় সম্পদ অর্জন করেননি। পানামা পেপার্সের ওই নথি পর্যালোচনার সুযোগ পেয়েছে চিলির সংগঠন সাইপার। তারা জানিয়েছে, বাহামাভিত্তিক পাঁচটি অফশোর মেকি কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত চিলির ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল প্রধান দেলাভিউ। সেগুলো হলো টার্নব্রুক কর্পোরেশন, হেলহি ইন্টারন্যাশনাল ইনকর্পোরেশন, টার্নব্রুক মাইনিং লিমিটেড ও ভিজাচিতাস লিমিটেড। এর মধ্যে টার্নব্রুক মাইনিংয়ের পরিচালক হিসেবে ছিলেন দেলাভিউ। কানাডার এক্সপ্লোরেশন ও ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লস অ্যান্ডেস কপারের ৫১.৬ শতাংশ শেয়ারের অংশীদার ওই টার্নব্রুক মাইনিং।