প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা জানি যাদের বন্দি করা হয়, তারা অপরাধী। তবে তাদের অপরাধ থেকে সরিয়ে আনতে হবে। অপরাধ প্রবণতা থেকে কিভাবে সরিয়ে আনা যায় তা চিন্তা করতে হবে। প্রযুক্তির উন্নয়ন হচ্ছে তার সঙ্গে অপরাধেরও ভিন্নতা পাচ্ছে। কোনো লোক অপরাধ করলে তাকে শাস্তি দিলেই অপরাধ শেষ হয়ে গেল তা নয়। তবে অপরাধীদের কিভাবে সংশোধন করা যায় তা দেখা হবে। তাদের নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়ার চেষ্টা করা হবে। তিনি বলেন, বন্দিদের কাজের বিনিময়ে মজুরি থাকবে। প্রয়োজনে একজন বন্দি যেন তার উপার্জিত মজুরি তার পরিবারকে দিতে পারে সে সুযোগ করে দিতে হবে। তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য তারা তৈরি করে নিতে পারবে। আজ রবিবার কেরানীগঞ্জে নবনির্মিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধন করার পর এক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনে জাতির পিতাকে শ্রদ্ধা জানাই। চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই, যাদের কারাগারে হত্যা করা হয়েছিল। ত্রিশ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেয়েছিলাম তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। তিনি বলেন, কারাগারের সঙ্গে ছোটবেলা থেকেই আমাদের সম্পর্ক। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন কারাগারে। বাঙালি জাতির কল্যাণে ও মানুষের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে, অন্যায়-অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিনি বারবার কারাগারে গেছেন। জাতির জনক আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। স্বাধীনতা আনতে গিয়েই তার বারবার এই কারা নির্যাতন বলেও মন্তব্য করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মান উন্নত হবে। সেই লক্ষে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তার ফলে দেশ উন্নত হচ্ছে। কারা অধিদফতর সূত্র জানায়, প্রায় সোয়া ২০০ বছরের ঐতিহ্য ভেঙে ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোড থেকে শিগগিরই কেরাণীগঞ্জে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারটি। একই সঙ্গে বদলে গেছে কারা স্থাপনার লাল রং। এটি এশিয়ার সর্বাধুনিক ও বৃহত্তম মডেল কারাগার। নবনির্মিত এ কারাগারে এক সঙ্গে প্রায় ৪ হাজার ৫৯০ জন পুরুষ বন্দি রাখা যাবে। পুরুষ কারাগারটির পাশে নতুন একটি নারী কারাগার নির্মাণাধীন রয়েছে। সেটি নির্মাণ শেষ হলে ২৭০ নারী বন্দি থাকতে পারবেন। চলতি মাসের মধ্যেই সব পুরুষ বন্দিকে কেরাণীগঞ্জের নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হবে। নারী বন্দিদের আপাতত রাখা হবে কাশিমপুরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পার্ট-২ এ। কেরাণীগঞ্জে নারী কারাগার নির্মাণ শেষ হলে তাদেরকেও স্থানান্তর করা হবে সেখানে।