ভারতের কেরালা রাজ্যের কোলাম জেলার পারাভুরের পুত্তিঙ্গল মন্দিরে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে এখন পর্যন্ত ১০৬ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে ৩৫০ জন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে মন্দিরে আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। শুরু হয় উদ্ধারকাজ।
পুলিশ জানায়, ওই মন্দিরে একটা উৎসবকে ঘিরে ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উৎসব উপলক্ষে রাতভর বাজি ফাটানোর প্রতিযোগিতা চলছিল। হঠাৎই বাজির আগুনের ফুলকি গিয়ে পড়ে মন্দির চত্বরে রাখা বাজির স্তুপে। মুহূতেই গোটা মন্দির ও মন্দির চত্বরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে । আতঙ্কে মানুষ দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেয়। ততক্ষণে আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়। দৌড়াদৌড়ির সময় পদপিষ্ট হয়ে মারা যান আরও বেশ কয়েক জন মানুষ।
প্রশাসন জানায়, আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বাজির বিস্ফোরণের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে মন্দিরের ছাদের একাংশ ভেঙে পড়ে। ধ্বংসস্তুপের নীচে কেউ আটকে আছেন কিনা তা খতিয়ে দেখছে উদ্ধারকারী দল।
বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, পুলিশ এবং দমকল বাহিনী জোরেশোরে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। উদ্ধার কাজে সহায়তা করতে বিমানবাহিনীর চারটি হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে।
আহতদের শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী উম্মেন চন্ডী ঘটনাস্থলে গেছেন। প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। হতাহতদের পরিবারের প্রতি তিনি সমবেদনাও জানান। তিনি কেরালায় যাচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দলও থাকছে।
তিনি এক টুইটার বার্তায় বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নাড্ডাকে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে।’
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কেরালা সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশনা দিয়েছেন মোদি।
ঘটনার জন্য দায়ীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছে কংগ্রেস। এ ঘটনায় মন্দির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
কেরালা প্রশাসনের ভাষ্য, প্রতিযোগিতামূলক ওই আতশবাজির জন্য তারা অনুমতি দেননি।
