অন্য বছরের মতো এবারও ঠাকুরগাঁও জেলার প্রায় ৪০ কিলোমিটার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় দুই দেশের মানুষের মধ্যে মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পহেলা বৈশাখের পরদিন দুই দেশের মানুষের মধ্যে দেখা-সাক্ষাতের সুযোগ থাকলেও এ বছর পহেলা বৈশাখ ও পরদিন সীমান্তে কাঁটাতারের এপার-ওপারে দুই দেশের নাগরিকদের দেখা-সাক্ষাতের সৌভাগ্য হয়েছে। বৃহস্পতিবার বালিয়াডাঙ্গী, রাণীশংকৈল, হরিপুর ও পীরগঞ্জ উপজেলার ভারতীয় সীমান্তের প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়ার পাশে লাখো মানুষের সমাগম দেখা যায়। ভোর থেকেই ঠাকুরগাঁও জেলা ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসতে থাকে। সকাল ৯টার দিকে ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী (বিএসএফ) কাঁটাতারের পাশে দুই দেশের মানুষকে সাক্ষাৎ করার সুযোগ করে দেয়। হরিপুর উপজেলার আটঘরিয়া সীমান্তে দেখা করতে আসা ষাটোর্ধ্ব রমনি বালা জানান, তার দুই ভাই ভারতের ফুলবাড়ি থাকেন। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পরে রমনি বালার বাবা বাংলাদেশে চলে আসেন। পরে তার দুই ভাই কাজের সন্ধানে ভারতে চলে যান এবং সেখানেই থাকেন। সীমান্তে কাঁটাতারের দুপাশে কেউ হাসছে আবার কেউ কাঁদছে। পরিজনের সাথে দেখা করতে আসা সত্তরোর্ধ্ব আবুল হাশেম জানান, প্রতি বছরই পহেলা বৈশাখের পরদিন এই সীমান্তে আসেন। ভারতে তার পরিজনদের সাথে বছরের এই দিনে দেখা হয়। তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে জানান, এবার দুই দিন দেখা করার সুযোগ আছে। তাই এই দুই দিনই পরিজনের সাথে দেখা করেন। সাক্ষাৎ করতে আসা অনেককে কাঁটাতার শক্ত করে ধরে অশ্রু সংবরণ করতে দেখা গেছে। পরিজনের সাথে বছরের এই দিনটিতে দেখা করতে পারলেও কাঁটাতারের কারণে তাদের সাথে বসতে বা ছুঁতে না পারার কষ্ট সবাইকে তাড়িত করে। এই মিলনমেলা উপলক্ষে ভারতীয় অংশে বিএসএফ ও বাংলাদেশ অংশে বিজিবি বিশেষ পাহারা বসায়। তবে দর্শনার্থীদের প্রতি তারা বেশ আন্তরিক ভাব প্রদর্শন করে।