বগুড়া প্রতিনিধিঃ ‘হে মহাভাগ শাঁখারী পুকুর, হে লৌহিত্য আমার পাপ মোচন কর’-এই পবিত্র মহামন্ত্র উচ্চারণের মধ্যদিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বগুড়ার শেরপুরে উপমহাদেশের ঐতিহাসিক পীঠস্থান মা ভবানীর মন্দির সংলগ্ন শাঁখারী পুকুরে রাম নবমী স্নানে অংশ নেন। দিনটিকে ঘিরে অতীত জীবনের পাপ মোচনসহ পূন্যলাভের আশায় মন্দিরস্থলে হাজারও পূণ্যার্থীর মিলনমেলা বসেছিল। এই উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই দেশ বিদেশের পূণ্যার্থীরা আসতে থাকেন। শুক্রবার দর্শনার্থীদের পদভারে মন্দির প্রাঙ্গন ও আশেপাশের এলাকা কাঁনায় কাঁনায় ভরে ওঠে। উপমহাদেশের ৫১টি পীঠস্থানের অন্যতম এই মন্দিরস্থলে আগত পূণ্যার্থীদের মিলনমেলা বসে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পূণ্যার্থীরা এসেছেন স্নান উৎসবে।
মন্দির পরিচালনা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নিমাই ঘোষ জানান, এই উৎসবে এবার প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লোক অংশ নিচ্ছেন। প্রতি বছর চৈত্রের রাম নবমী তিথিতে মন্দির ও তার আশেপাশের এলাকাজুড়ে এ স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ধর্মীয় শাস্ত্রমতে, দিনটিতে এ স্থানে অংশ নিলে তার অতীত জীবনের পাপ মোচনসহ পূন্যলাভ হয়। আর সেই আশায় দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে হাজার হাজার ভক্ত নর নারী ও শিশু কিশোর মন্দিরের শাঁখা পুকুরে স্নান করেন। সেই সঙ্গে ঐতিহাসিক এই মন্দিরে রক্ষিত প্রতিমা দর্শন, পূজাঅর্চনা, ভোগদান, অর্ঘদান, মাতৃদর্শন করেন ভক্তরা। মন্দিরের পক্ষ থেকে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
এদিকে রাম নবমী উৎসবকে ঘিরে প্রতিবছর মা ভবানী মন্দিরের চারপাশে মেলা বসে। মেলায় মিষ্টান্ন সামগ্রীসহ পাওয়া যায় রকমারি খাবার। সেই সাথে শিশুদের বিভিন্ন খেলনা, ইতিহাস ঐতিহ্যখ্যাত বই পুস্তকও মেলায় পাওয়া যায়। এছাড়া প্রতিবারের ন্যায় এবারও শান্তিপুর্নভাবে ধর্মীয় বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান পালন করার সুবিধার্থে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক দলগঠন করা হয়েছে বলে মন্দির কমিটির নেতা সুজিত কুমার বসাক জানান।