বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) উদ্যোগে রাজধানীর শেরেবাংলানগরস্থ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ‘দি বাংলাদেশ জার্নি’ শিরোনামে দ’দিন ব্যাপী এক সম্মেলন আজ শনিবার শুরু হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আজ সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। তিনি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে দৃঢ়তার সাথে বলেন,বাংলাদেশে অব্যহত উন্নয়নের যে ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে তার প্রেক্ষিতে বলা য়ায়, ২০৩০ সালের মধ্যে এ দেশের দরিদ্র মানুষের সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে। ২০৫০ সালের মধ্যে বিশে^ অর্থনীতিতে বাংলাদেশ হবে ২৩তম শক্তিশালী দেশ উল্লেখ করে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতির মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে এদেশের কৃষক, কামার, জেলে, তাঁতীসহ খেটে খাওয়া মানুষ। এ জন্যই আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে কে কি বলছে তা নয় বরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আমরা কি করছি তার ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে।’ আ হ ম মুস্তফা কামাল জোর দিয়ে বলেন, প্রবৃদ্ধি অর্জনের যে স্বপ্ন সামনে রাখা হয়েছে বাংলাদেশ তা স্পর্শ করবেই। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা পর্যালোচনা করতে তাত্বিক গবেষক এবং নীতিনির্ধারকদের পাশাপাশি নাগরিক সমাজের মতামত জানতে বিআইডিএস এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। বিআইডিএস’র মহাপরিচালক ড. কে.এ.এস মুর্শিদ এ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অপরদিকে গেষ্ট অব অনার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানী বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক এলাহী চৌধুরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব তারিক উল ইসলাম এবং ব্র্যাক বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর সৈয়দ সাদ আন্দালিব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। পরিকল্পনা মন্ত্রী বিশে^র বেশ ক’টি দেশের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ওইসব দেশের জিডিপিতে আমাদের চেয়ে অনেক কম বিনিয়োগ। তা সত্ত্বেও তারা অনেক ভাল প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে তিনি বলেন, ৫ বছর আগেও এ দেশে শতকরা একভাগ মানুষ টেকনিক্যালি সাউন্ড ছিলনা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার শতকরা বিশভাগ মানুষকে কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন করে গড়ে তুলবে এ লক্ষ্য নিয়ে কাজ করায় সে লক্ষ্য আজ অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। এর ফলে উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং জিডিপিতেও প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে পরিকল্পনা মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এদিকে, সম্মেলনের আয়োজক প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস জানিয়েছে, দেশে এই প্রথম এ ধরনের পর্যালোচনা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ সম্মেলনের নয়টি অধিবেশনে অবকাঠামো, শিক্ষা, কৃষি, ভূমি, দারিদ্র্য, গণতন্ত্র, সুশাসন, আঞ্চলিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। সম্মেলনের শেষ দিনে আগামীকাল রোববার সকালে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের চেয়ারপার্সন আইনজীবী সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে ‘গণতন্ত্র, সুশাসন এবং উন্নয়ন’ বিষয়ক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন জ্যেষ্ঠ গবেষক বিনায়ক সেন। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ ও অর্থ সচিব ড.আকবর আলি খান, বিআইডিস’র গবেষক এম আসাদুজ্জামান, আইনজীবী তানিয়া আমির এবং ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান ওই অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন বলে আয়োজক প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে। দু’দিনব্যাপী এ সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ও সাবেক সচিব ড.মসিউর রহমান। সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।