রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। গতকাল শনিবার রাতে শিক্ষক সমিতির জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রবি ও সোমবার অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আজ রবিবার ধর্মঘট ডাকা হয়।
আজ রবিবার সকাল ১০ টায় ইংরেজি বিভাগ ক্যাম্পাসে শোক মিছিল বের করে। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় সমাবেশে বক্তব্য দেন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এএফএম মাসউদ আখতার, অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ্, অধ্যাপক মো. জহুরুল ইসলাম।
সমাবেশে বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এ জঘন্য হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানাই। আমাদের চলমান আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে আজ থেকে তিনদিন বিভাগের সকল ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন সিনেট ভবনের সামনে সকাল ১০ টা থেকে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। এছাড়া আগামীকাল বিভাগে শোকসভার আয়োজন করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। গত বারো বছরে রাবিতে ৪ জন শিক্ষক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের এখনো সুষ্ঠু বিচার হয়নি। আমরা আর মিথ্যা আশ্বাসে বসে থাকতে চাইনা। আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
সমাবেশ শেষে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকে পাঁচ মিনিট একটি প্রতীকী অবস্থান করে। এসময় প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সহকর্মী হত্যার প্রতিবাদ ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে বেলা ১১টার দিকে শিক্ষক সমিতি সিনেট ভবনের সামনে থেকে মৌন মিছিল বের করে। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সেখানে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয় হয়। সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহ্ আজমের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক সাইদুর রহমান খান প্রমূখ।সমাবেশে উপাচার্য বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বেঁচে থাকার স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সৃষ্টি হয়েছে শূন্যতা। পূর্বে আমরা অনেক শিক্ষককে হারিয়েছি। তাই স্বাভাবিকভাবেই আমরা উত্তাল হয়েছি।
এসময় রাবি শিক্ষক সমিতির ব্যানারে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে একটি মানববন্ধনের ঘোষণা দেয়া হয়। একই সময়ে এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাবি প্রগতিশীল ছাত্রজোট। এছাড়া দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোট কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে। একই সময়ে প্যারিস রোডে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা শোকসভা করছে।