পাকিস্তান ক্রিকেট সাম্প্রতীক সময়ে বেশ বাজে সময় অতিবাহিত করছে। আর দলের এই ক্রমাবনতির অন্যতম কারন হিসেবে বিদায়ী কোচ ওয়াকার ইউনুসকে দায়ী করেছেন বেশ কিছুদিন যাবত দলের বাইরে থাকা টেস্ট অল-রাউন্ডার আব্দুল রাজ্জাক।
এক সাক্ষাতকারে সম্প্রতী রাজ্জাক তার সাবেক অধিনায়ক ও সতীর্থের প্রতি সরাসরি আক্রমন করে বলেছেন তার উচিত ছিল দলের এই খারাপ সময়ে অন্যের ওপর দোষ না চাপিয়ে আগে নিজে কি ভুল করেছেন সেটার ব্যাখ্যা দেয়া। রাজ্জাক বলেন, ‘এটা এখন আর গোপন নয় যে ওয়াকার কখনই দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের শ্রদ্ধা করতে চাইতেন না। সব খেলোয়াড়কে কখনই তিনি একই দৃষ্টিকোন থেকে দেখেননি। সে কারনেই দল ধীরে ধীরে ব্যর্থ হয়েছে। খেলোয়াড়দের মধ্যে নিরাপত্তার অভাব তার কারনেই জন্ম নিয়েছে। দেশের হয়ে ভাল পারফর্ম করার আত্মবিশ্বাস সে কখনই খেলোয়াড়দের মধ্যে ছড়াতে পারেনি।
৩৬ বছর বয়সী রাজ্জাক পাকিস্তানের হয়ে ৪৬ টেস্ট, ২৬৫ ওয়ানডে ও ৩২টি ওয়ানডে ম্যাচে অংশ নিয়েছেন। ২০১৪ সালে সর্বশেষ পাকিস্তানের জার্সি গায়ে মাঠে নামার আগে রাজ্জাক বলেছিলেন ওয়াকারের পছন্দ-অপছন্দের কারনে দলের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে।
এদিকে সাবেক কিছু খেলোয়াড়দের দলের সাথে সম্পৃক্ততা খুব একটা ভাল চোখে দেখেনি বর্তমান দলের বেশ কিছু সিনিয়র খেলোয়াড়। মিসবাহ-উল-হক ও ইউনিস খানকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেবার পিসিবির সিদ্ধান্তটিও দারুনভাবে সমালোচিত হয়েছে। রাজ্জাক বলেন, সীমিত ওভারের ম্যাচে বর্তশানে পাকিস্তান একেবারে তলানিতে অবস্থান করছে। এজন্য গত ছয়-সাত বছরে যারা দলের সাথে তাই দায়ী। বোর্ডকে তারা কি পরামর্শ দিয়েছে বা দিচ্ছে। পাকিস্তান ক্রিকেটের আজকের এই দুরবস্থার জন্য সাবেক কিছু খেলোয়াড়রাও দায়ী। রাজ্জাকের মতে, কিছু সাবেক খেলোয়াড় আছেন যাদের কাজই হচ্ছে শুধুমাত্র ভাল চাকরী ও পজিশনের চিন্তা করা। কতজন তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করেছে এবং পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য ভাল কিছু উপহার দিয়েছে।
তবে প্রধান নির্বাচক হিসেবে সাবেক অধিনায়ক ইনজামাম-উল-হকের নিয়োগ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন রাজ্জাক। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি তার অধীনে খেলেছি। অধিনায়ক হিসেবে তিনি যা ছিলেন সেই একই রীতি যদি এখানেও মেনে চলতে পারেন তবে সেটা পাকিস্তানের ক্রিকেটের জন্য ভাল হবে। ইনজামাম কখনই একজন খেলোয়াড়কে পরিসংখ্যান দিয়ে বিচার করতেন না। পাকিস্তানের জন্য সে কি দিচ্ছে সেই বিবেচনায় তিনি তার সাথে খেলতেন। সবসময়ই তিনি দল নির্বাচন নিয়ে বোর্ডের সাথে লড়াই করেছেন।
রাজ্জাক মনে করেন সাম্প্রতীক সময়ে পাকিস্তান ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে নির্বাচকদের দক্ষতার অভাব ও দলীয় ব্যবস্থাপনা বুঝতে পারেনা কোন ফর্মেটের জন্য কোন খেলোয়াড় আদর্শ হবে। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের পারফরমেন্স দিয়ে আবারো নির্বাচকদের সুদৃষ্টিতে এসে জাতীয় দলে খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন রাজ্জাক।