বরিশালে থাকবে না আর লোডশেডিং

0
219

বরিশাল প্রতিনিধি ॥ বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সামিট বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করেছে। ফলে বরিশাল অঞ্চলে আর বিদ্যুৎ লোডশেডিং হবেনা। এমনটাই জানিয়েছেন সামিটের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান।
সূত্রমতে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-বিডিডিবি’র সাথে ১৫ মাসের মধ্যে উৎপাদন শুরু করার চুক্তি হয় সামিট কোম্পানির। কিন্তু দুই মাস আগেই তারা সফলতার মুখ দেখেন। সামিটের চেয়ারম্যান বলেন, কীর্তনখোলা নদীর পাড়ে রূপাতলী এলাকায় ৯ একর জমির ওপর ২০০৬ সালে এই বিদ্যুত কেন্দ্রটি গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। ৫৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ১১৯.৫ মেগাওয়াট। ১০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিরলস পরিশ্রমে গড়ে ওঠা কেন্দ্র থেকে গত ৫ এপ্রিল জাতীয় গ্রিডে ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়েছে। এ বিদ্যুৎ উৎপাদনের ফলে নিকট ভবিষ্যতে দক্ষিণাঞ্চলের প্রবৃদ্ধি ১৫ থেকে ২০ শতাংশের ঘরে চলে আসবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটির ডিজাইন ও নির্মাণ করেছে বিশ্বখ্যাত ওয়াটসিলা ফিনল্যান্ড কোম্পানি। বরিশাল হচ্ছে সামিটের ১৩তম বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ব্রান্ড নিউ মেশিন দিয়ে পরিচালিত কেন্দ্রটি দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বলে দাবি করে চেয়ারম্যান বলেন, আগামীতে সামিট আরও উন্নত বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে আগ্রহী।
মুহাম্মদ আজিজ খান বলেন, একদিকে স্বপ্নের পদ্মা সেতু আর অন্যদিকে সামিটের বিদ্যুতের ফলে বৃহত্তর বরিশাল দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় বড় রকমের উন্নতির দিকে চলে যাবে। বরিশাল বাংলাদেশেরই উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হবে। সামিট কোম্পানি লাভজনক জানিয়ে তিনি বলেন, এর লাভ দিয়েই এতো বড় বড় কেন্দ্র করা হচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ প্রায় সাত টাকায় বিক্রি করি। আমরা কেন্দ্রে নিজস্ব জেটিতে তেল খালাস করে থাকি। কেন্দ্রে ইতোমধ্যে ১৫ দিনের জ্বালানীর মজুদ নিশ্চিত করতে সাত হাজার মেট্রিক টন ধারণ-ক্ষমতার ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে। ফলে যেকোনো পরিস্থিতিতে সামিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম রয়েছে। প্রায় এক মাস আগে সামিট বরিশালে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করলেও কেন আগের মতোই লোডশেডিং হচ্ছে জানতে চাইলে সামিট চেয়ারম্যান বলেন, একস্থানের বিদ্যুৎ অন্যস্থানে নিতে গেলে সিস্টেম লস হয়। তাই বরিশালের বিদ্যুৎ বরিশালেই বেশি সরবরাহ করা উচিত। এবিষয়ে তিনি উচ্চ পর্যায়ে কথা বলার আশ্বাস দিয়ে আরও বলেন, ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে অর্থনৈতিক মুক্তি সংগ্রাম শুরু হয়েছে। আমরা সবাই অর্থনৈতিক মুক্তিযোদ্ধা। দেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত সামিট এ যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল অঞ্চলে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত চাহিদা রয়েছেন। এরমধ্যে ৪০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন ডিজেলচালিত একটি সরকারি বিদ্যুত কেন্দ্র রয়েছে। আর এখন সামিট দিচ্ছে ১১০ মেগাওয়াট। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুত থাকায় শুধুমাত্র সিস্টেম লস ঠেকানো গেলেই এখন আর গ্রাহককে বিদ্যুৎ যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হতে হবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here