ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা বিষয়ে রায় আজ

0
444

সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের বিধান সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছ থেকে জাতীয় সংসদে ফিরিয়ে নেওয়ার বিধান-সংবলিত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা প্রশ্নে রায় হবে আজ বৃহস্পতিবার। বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ এদিন দুপুর ২টায় রায় ঘোষণা করবেন। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কার্যতালিকায় দেখা যায়, এই বেঞ্চের কার্যক্রম দুপুর ২টা থেকে বিকেল সোয়া ৪টা পর্যন্ত রাখা হয়েছে। তবে কার্যতালিকায় এই একটি মাত্র মামলাই রয়েছে। এদিন যার রায় প্রদান করা হবে। বিগত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানটি তুলে দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন এনে বিচারকের অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যেটি ১৯৭২ সালের সংবিধানেও ছিল। সংবিধানে এই সংশোধনী যুক্ত হওয়ার ফলে মৌল কাঠামোতে পরিবর্তন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করবে, এমন যুক্তিতে ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছর ৫ নভেম্বর হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। ওই আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর রুল জারি করেন। রুলে ওই সংশোধনী কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব ও আইন সচিব, সংসদ সচিবালয়ের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। এই রুলের ওপর ২০১৫ সালের ২১ মে শুনানি শুরু হয়। ওই দিন আদালত মতামত দিতে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) হিসেবে জ্যেষ্ঠ পাঁচ আইনজীবীর নাম ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও আজমালুল হোসেন কিউসি অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। রিটকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জানান, সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেনসহ বেশির ভাগ আইনজীবী মত দেন, এই সংশোধনীর ফলে সংবিধানের মৌল কাঠামোতে পরিবর্তন হবে। গত ১০ মার্চ মামলাটির চূড়ান্ত শুনানি শেষে ৫ মে রায়ের দিন ধার্য করা হয়। এ-সংক্রান্ত মামলার রায়ের মাত্র ১০ দিন আগেই (২৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বিচারক (তদন্ত) আইনের খসড়াটি মন্ত্রিসভা নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। সংবিধানের ৯৬ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের প্রমাণিত অসদাচরণ বা অসামর্থ্যের কারণে সংসদের মোট সদস্য-সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সিদ্ধান্তক্রমে রাষ্ট্রপতির আদেশ দ্বারা অপসারণ করা যাবে। তবে ৯৬ (৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অসদাচরণ বা অসামর্থ্য সম্পর্কে তদন্ত ও প্রমাণের পদ্ধতি সংসদ আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। মূলত সংবিধানের এই বিধান কার্যকর করতেই বিচারকদের অসদাচরণ বা অসামর্থ্যের বিষয়টি তদন্তের জন্য বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বিচারক (তদন্ত) আইন, ২০১৬ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here