সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ

0
390

সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে দিয়ে করা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে অবৈধ বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদনের এ রায় দেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ। বেঞ্চের অন্য দুই বিচারপতি হলেন : বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়। বিলটি পাসের পর ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। সংবিধানের এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ৯ আইনজীবী হাইকোর্টে এ রিট আবেদন দায়ের করেন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর এ সংশোধনী কেন অবৈধ, বাতিল ও সংবিধানপরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গত বছরের ২১ মে রুলের শুনানি শুরু হয়। গত বছরের ১০ মার্চ এ রুলের শুনানি শেষে ৫ মে রায়ের দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে গত ২৫ এপ্রিল অসদাচারণের জন্য সুপ্রিম কোর্টের কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে তদন্ত ও তাকে অপসারণের প্রক্রিয়া নির্ধারণ করে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বিচারক (তদন্ত) আইন-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এ ছাড়া অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে শুনানি করেছেন শীর্ষ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, এম আমীর-উল ইসলাম, রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও আজমালুল হোসেন কিউসি। ১৯৭২ সালে প্রণীত মূল সংবিধানে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ছিল। ১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এ ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে অর্পণ করা হয়। পরে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা দেওয়া হয় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে। মার্শাল প্রক্লামেশনে করা পঞ্চম সংশোধনীতে এ ক্ষেত্রে ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনা হয়েছিল। ষোড়শ সংশোধনীতে সেটা বাতিল করে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয় সংসদকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here