জরুরি অবস্থার সময় দুদকের করা একটি দুর্নীতি মামলা থেকে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে অব্যাহতি দিয়ে যে রায় হাইকোর্ট দিয়েছিলেন, তা বাতিল হয়ে গেছে আপিল বিভাগে। দুদকের করা লিভ টু আপিলের নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ আজ রবিবার এই রায় দেন। হাইকোর্টের রায় বাতিল হয়ে যাওয়ায় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির এই অভিযোগের তদন্ত চালাতে আর কোনো আইনি বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানজিবুল আলম। গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারেও একই দপ্তরের দায়িত্বে ছিলেন। সেই সময়ে সরকারি জমি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ দুদকের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ২০০৭ সালের ২২ নভেম্বর চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানায় এ মামলা দায়ের করেন। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ ছাড়াও ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি রফিকুল আনোয়ার ও তার ভাই হোটেল গোল্ডেন ইন লিমিডেটের পরিচালক ফখরুল আনোয়ারকে এ মামলার আসামি করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, মোশাররফ হোসেন চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকায় কার পার্কিংয়ের জন্য বরাদ্দ করা একটি জায়গা তিন তারকা হোটেল গোল্ডেন ইন নির্মাণের জন্য ইজারা দেওয়ার সুপারিশ করেন। ১ দশমিক ৪৪ বিঘা আয়তনের ওই জমির মূল্য ধরা হয় এক কোটি ৬৯ লাখ ২০৭ টাকা। পরে লিজের শর্ত ভেঙে মেসার্স সানমার হোটেল লিমিটেডের নামে ওই জমির ইজারা নিবন্ধন করা হয়। এ ক্ষেত্রে দলিলে উল্লেখ করা দরের চেয়ে সানমার হোটেলের কাছ থেকে ২ কোটি ৯২ লাখ ৭৮ হাজার ৭৪৮ টাকা বেশি আদায় করা হয় বলে দুদকের এজাহারে বলা হয়। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ মামলাটি বাতিলের আবেদন করলে ২০০৮ সালে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রুল জারি করেন। ওই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি করে ২০১২ সালের ২০ নভেম্বর বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি ফরিদ আহমেদের বেঞ্চ মামলাটি বাতিল করে দেন। পরে এর বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করে দুদক। সেই লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে আপিল বিভাগ রবিবার হাইকোর্টের রায় বাতিল করে দিলেন।