বরিশাল প্রতিনিধি ॥ মৎস্য কর্মকর্তাদের নজরদারীর অভাবে জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার মেঘনা নদীতে প্রতিদিন চিংড়ির রেণু নিধনের মহোৎসব চলছে। মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে গলদা চিংড়ির রেণু শিকারে মেতে উঠেছেন সব বয়সের জেলে ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
সূত্রমতে, বৈশাখ মাস থেকে আষাঢ় পর্যন্ত হাজার হাজার জেলে প্রতিদিন মেঘনা নদীতে রেণু চিংড়ি নিধনে মেতে ওঠে। নদীর কুলে বাঁশের খুটির সাথে সুক্ষè ফাঁসের হাজারো বেহুন্দি ও মশারির কাপড় দিয়ে শিকার করা হচ্ছে গলদা চিংড়ির রণু পোনা। এতে চিংড়ি পোনার সাথে প্রতিদিন ধ্বংস হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক লাখ পোনা মাছ। এ সকল রেণু চিংড়ি যশোর, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা থেকে আসা পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা প্রায়ই নদীতে অভিযানের নামে চিংড়ি রেণু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। যারা টাকা দিচ্ছেন না অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে চিংড়ির রেণু জব্দ করে নদীতে ফেলার নামে অন্য ব্যবসায়ীদের কাছে তা (জব্দকৃত রেণু) বিক্রি করা হচ্ছে। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন চিংড়ির রেণু পোনা ক্রয়ের জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারী ব্যবসায়ীরা নদীর পাড়ে ভীড় জমায়। মেঘনা নদীর পাড়ের মল্লি¬কপুর, কালিগঞ্জ, উলানিয়া বাজার, বাবুগঞ্জসহ ১০টি স্থানে প্রতিদিন রেণু পোনার হাট বসে। জেলেরা গলদা ও বাগদা পোনা ধরে এসব বাজারে প্রতিপিস দেড় টাকা দরে বিক্রি করছেন। পাইকারী ব্যবসায়ীরা এখান থেকে রেণু চিংড়ি ক্রয়ের পর ড্রাম কিংবা পাতিল ভর্তি করে নৌ-পথে খুলনা, যশোর, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার আড়ৎদারের কাছে প্রতিটি রেনু পাঁচ থেকে ছয় টাকা দরে বিক্রি করছেন। উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, নদী থেকে চিংড়ি রেণু পোনা ধরা সম্পূর্ন নিষেধ। অবৈধ ক্রেতা-বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।