ন্যায্য মূল্যে পাওয়া যাবে রমজানের পাঁচ পণ্য

0
325

প্রতিবছরই রমজান মাসকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণ করে সরকারি বিপণন প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এবারও এই উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। রোজায় চিনি, সয়াবিন তেল, মসুর ডাল, ছোলা এবং খেজুর—এই পাঁচ পণ্য খোলাবাজারে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করবে টিসিবি। এ লক্ষ্যে এসব পণ্য মজুদ শুরু করেছে সংস্থাটি। টিসিবি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, এবার রোজার মাসের জন্য টিসিবি চিনি সংগ্রহ করবে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি) থেকে। এ ছাড়া আরো বেশি প্রয়োজন পড়লে টিসিবি এ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যখন ইচ্ছে চিনি নিতে পারে। বিএসএফআইসির সঙ্গে ঠিক এ ধরনেরই চুক্তি রয়েছে টিসিবির। গত প্রায় তিন বছর ধরে এখান থেকেই চিনি কিনছে টিসিবি। সূত্র জানায়, টিসিবি এবারের রোজাকে ঘিরে ৫০০ টন সয়াবিন তেল মজুদ করছে। স্থানীয় বাজার থেকে বোতলজাত সয়াবিন সংগ্রহ করে ভোক্তাকে দেওয়া হবে ন্যায্য মূল্যে। সয়াবিন তেল ক্রয়ের জন্য ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। জানা গেছে, এবার ভোজ্য তেলের মূল্য কম থাকায় টিসিবি মজুদও করছে কম। কারণ কোনো পণ্যমূল্য কম থাকলে ক্রেতারা সাধারণ বাজার থেকেই বেশি কেনে। গত বছরও সয়াবিন তেলের দাম ক্রেতার নাগালে ছিল। এ কারণে টিসিবির সরবরাহকৃত ভোজ্য তেল বেশি বিক্রি হয়নি। এ জন্যই সংস্থাটি এবার ভোজ্য তেল মজুদ করছে কম। এবার মসুর ডালের বাজার বেশ চড়া। বর্তমানে আমদানিকৃত ভালো মানের মসুর ডালের কেজি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। রোজা আসার আগে মসুর ডালের দাম আরো বেড়ে যেতে পারে। এ কারণে টিসিবি বেশ আগেভাগেই মসুর ডাল মজুদ করেছে। ইতিমধ্যে টিসিবির গুদামে মসুর ডাল মজুদ রয়েছে এক হাজার ১০৭ টন। এ জন্য আপাতত নতুন করে আর মসুর ডাল কেনা হবে না। তবে চাহিদা বাড়লে এবং মজুদ কমলে তখন আবারও মসুর ডাল সংগ্রহ করা হতে পারে। রমজানের আরেক প্রয়োজনীয় পণ্য ছোলা। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি এবার এক হাজার ৫০০ টন ছোলা মজুদের উদ্যোগ নিয়েছে। এবার অস্ট্রেলিয়া থেকে আনা হচ্ছে উন্নতমানের ছোলা। কানাডাভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে এই ছোলা সরবরাহ করছে টিসিবিকে। প্রতি কেজি আমদানিমূল্য পড়ছে ৭৪ টাকা। তবে টিসিবি ভর্তুকি দিয়ে বিক্রি করায় খুচরা মূল্য আরো কম হবে। ইতিমধ্যে ছোলার চালান জাহাজে উঠেছে। আগামী ২২ বা ২৩ মে চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়বে ছোলাবাহী জাহাজ। খেজুর দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে সবশেষে খেজুর ক্রয় করবে টিসিবি। আগে কয়েক বছর নিজেরাই সরাসরি আমদানি করে খেজুর বিক্রি করলেও এবার স্থানীয় বাজার থেকে খেজুর সংগ্রহ করা হবে। তবে কত টন খেজুর সংগ্রহ করা হবে সেটি নির্দিষ্ট করা হয়নি। স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় যখন যা প্রয়োজন হবে কিনবে টিসিবি। তবে খেজুর ক্রয়ের জন্য কয়েক দফা লোকাল দরপত্র আহ্বান করা হয়, কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি। এ কারণে কোটেশনের মাধ্যমে খেজুর কেনা হবে বলে জানা গেছে। টিসিবি সূত্রে জানা যায়, গত বছর ডিলারপ্রতি ১০০০-১৫০০ কেজি চিনি, ১০০ থেকে ২০০ কেজি মসুর ডাল, পাঁচ লিটারের সয়াবিন ১০০-১০০০ হাজার লিটার, এক ও দুই লিটারের সয়াবিন ১০০-১০০০ লিটার, ৫০০-৮০০ কেজি ছোলা এবং ৫০ কেজি খেজুর দেওয়া হয়। আর খোলাবাজারে ন্যায্যমূল্যে ক্রেতাপ্রতি পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল, চার কেজি চিনি, তিন কেজি ছোলা, চার কেজি মসুর ডাল এবং দুই কেজি করে খেজুর দেওয়া হয়। গত বছর খোলাবাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি করা হয় ৩৭ টাকা দরে। এ ছাড়া পাঁচ লিটারের সয়াবিনের প্রতি লিটারের মূল্য ৮৮ টাকা, এক ও দুই লিটারের মূল্য ৮৯ টাকা, ছোলা ৫৩ টাকা এবং খেজুর ৮০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। সার্বিক বিষয় সম্পর্কে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবীর বলেন, রোজার মাসে সাধারণত যেসব পণ্যের চাহিদা বেশি এবং মূল্যও বেশি মূলত সেসব পণ্য মজুদ করে টিসিবি। এসব পণ্যের মূল্য যাতে ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে না যায় তার জন্যই টিসিবির এ উদ্যোগ। এ বছরও সব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শেষ রমজান পর্যন্ত টিসিবির পণ্য ডিলারদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here