বিএনপিতে মনোনয়ন ও পদ বাণিজ্য নিয়ে সোচ্চার স্থায়ী কমিটি

0
241

পদ ও মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগের খবরে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির  সদস্যরা। এ ব্যাপারে তাঁরা তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। তবে বিষয়টি জেনে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও অস্বস্তি বোধ করেছেন বলে দলের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। গতকাল সোমবার রাত ৯টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শুরু হয়ে রাত সাড়ে ১১টায় শেষ হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই আড়াই ঘণ্টার বৈঠকে শেষ পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে থাকার সিদ্ধান্ত, দ্রুত দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠন করা, প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৩০০ মিলিয়ন ডলারের বিষয়টি বিভিন্ন সভা-সমাবেশের মাধ্যমে তুলে ধরা, ৩০ মে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী সপ্তাহব্যাপী জাঁকজমকভাবে করাসহ সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্র জানায়। সূত্র জানায়, বৈঠকে স্থায়ী কমিটির অধিকাংশ সদস্য মনোনয়ন ও পদ বাণিজ্যের ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য দেন। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ বলেন, এই বিষয়টি টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। যারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের ব্যাপারে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনার অফিসকে পুঁজি করে এভাবে পদ ও মনোনয়ন বাণিজ্য চলতে দেওয়া যায় না। এ নিয়ে সারা দেশের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে গুলশান কার্যালয়ে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে।’ স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুব বলেন, দলে যে পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে তাতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। স্থায়ী কমিটির নেতাদের এ ধরনের বক্তব্যের পর খালেদা জিয়াও বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরকারের ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। বৈঠকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যেভাবে সরকারি দলের প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ভোট ডাকাতি করছে, এ অবস্থায় ইউপি নির্বাচনে না থাকার ব্যাপারে অনেকে প্রস্তাব করেন। তবে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়, আর দুটি ধাপের নির্বাচন আছে। এই নির্বাচন বর্জন করা ঠিক হবে না। নির্বাচনে থাকার সিদ্ধান্ত হয়। সূত্র জানায়, বৈঠকের দুজন সদস্য মনোনয়ন বাণিজ্যের খবর সত্য নয় উল্লেখ করে বক্তব্য দেওয়ার সময় অন্য সদস্যদের তোপের মুখে পড়েন। পরে তাঁরা অন্য প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করেন বলে সূত্র জানায়। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের অর্থ ‘পাচার’-এর বিষয় বক্তব্য-বিবৃতিতে জোরালোভাবে তুলে ধরার পরামর্শ দেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এ জন্য এফবিআইয়ের কিছু নথিপত্রের ফটোকপিও সদস্যদের মধ্যে হস্তান্তর করা হয়। এ ছাড়া বিএনপির অঙ্গসহযোগী সংগঠন যুবদল, শ্রমিক দলের কমিটি শিগগিরই দেওয়ার ব্যাপারেও আলোচনা হয়। অন্যদের মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here