হয়ে গেল ভেনিস চলচ্চিত্র ফেস্টিভ্যাল। আর ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল মানেই তারকাদের হাট। হাজির হয়েছিলেন বিশ্বের নামী-দামী তারকারা। পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল যেন অভিনেত্রী-মডেলদের পোশাকের সঙ্গে শরীরের প্রদর্শনী। নিজেকে অর্ধনগ্ন করে বন্দি হয়েছেন ক্যামেরার ফ্রেমে। হেঁটেছেন লাল গালিচায়। পেয়েছেন করতালি। ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে অর্ধনগ্ন পোশাক পরে রেড কার্পেটে হেঁটে ঝড় তুলেছেন কয়েকজন মডেল। এদের মধ্যে বেলা হাডিড নামে এক মডেল অন্তর্বাস ছাড়াই পোশাক পরেছিলেন। তাতে শরীরের স্পর্শকাতর অনেক স্থান উন্মুক্ত থাকায় সমালোচনায়ও পড়েন তিনি। নতুন এই অর্ধনগ্ন পোশাকের পক্ষে-বিপক্ষে নানা কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় মডেল বেলা হাডিড। তিনি এ অনুষ্ঠানে কোনো আন্ডারওয়্যার ছাড়া পোজ দিয়েছেন। আন্ডারওয়ার ছাড়াই কোর্চ বেয়ারিং ড্রেস পরে রেড কার্পেটে পোজ দিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন এ মডেল। সম্প্রতি ফ্রান্সের কেনসাস শহরে ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হয়। ফেস্টিভ্যালে দেখা যায়, নামিদামি অনেক মডেল প্রায় নগ্ন পোশাকে পোজ দিচ্ছেন। এর আগেও এ ধরনের পোশাক পরে পোজ দিয়েছিলেন অনেক মডেল। তবে ফ্যাশন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এবারের রেড কার্পেটে অর্ধনগ্ন পোশাক পরে হাঁটা পরবর্তীতে ফ্যাশন জগতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। অনেকে এ ধরনের পোশাককে সমর্থন করছেন, আবার অনেকে এটির সমালোচনাও করেছেন। ব্রিটিশ মডেল ও ফ্যাশন উপস্থাপিকা নোয়ামী ইস্টেড জানিয়েছেন, তিনি এই নতুন পোশাকের প্রচলন সমর্থন করেন না। তিনি মনে করেন এটি একটি বিদ্রুপকারী ফ্যাশন। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সময়ের মডেল ও তারকারা আন্তর্জাতিক প্রচরণা পাওয়ার জন্য যে কোনো পোশাক পরতে দ্বিধাবোধ করে না। এ বছরে শরীরের সাথে লেগে থাকা বডিশুট ও আন্ডারওয়ার বহির্ভূত পোশাকের ছড়াছড়ি শুরু হয়েছে। এই ধরনের পোশাক জনসাধারণের সামনে পরা খুবই বিপজ্জজনক। আর এই পোশাকের প্রচলন ফ্যাশন ধ্বংসেরও সামিল। তবে যাদের লাসুলা, বোহো ও মিশি ইম্পায়ারের মত জনপ্রিয় ফ্যাশন হাউসে কাজ করার স্বপ্ন আছে, তারা এই পোশাক পরতে পারেন। তবে এটা ভেবে আনন্দিত হওয়ার কোন সুযোগ নেই যে, শুধু খোলা মেলা পোশাক পরলেই ভাল মডেল হতে পারবেন।’ নতুন আলোচনায় আসা পোশাকগুলোর মধ্যে সি-স্ট্রিং খুবই জনপ্রিয়। এই সি-স্ট্রিং বড় বড় ফেস্টিভ্যালে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে এমনও দেখা গেছে, মডেলরা কোনো আন্ডারওয়ার ছাড়া শুধু বডিশুট পরেই পোজ দিয়েছেন। ‘শিবু’ নামের এক ধরনের পোশাকও এবারের ফেস্টিভ্যালে দেখা গেছে। এই পোশাকে ছোট্ট এক টুকরা কাপড় দিয়ে শুধু লজ্জাস্থান ঢাকা থাকে। উপরের সামান্য অংশ জেল বা আঠালো পদার্থ দিয়ে আটকানো থাকে। যেন পোশাকটি পড়ে না যায়। তবে নায়ামী এ ধরনের অর্ধনগ্ন পোশাক না পরার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি নারীদের বড় প্যান্ট বা বডিশুট পরার ব্যপারে উৎসাহিত করেছেন। তিনি মনে করেন, বড় প্যান্ট বা বডিশুট নারীর জন্য নিরাপদ। তবে তিনি স্কার্ট পরার ব্যপারেও বলেছেন। কারণ, কাটা স্কার্টের এক দিকের অংশ যদি সরে যায় তাহলে আরেক অংশ দিয়ে লজ্জাস্থান ঢাকা থাকবে। তবে সেপওয়্যার পরলে সবচেয়ে ভালো হয়। কারণ সেপওয়্যারে কোনো কিছু খুলে পড়ার সুযোগ নেই। তবে যারা বেশির ভাগ সময় বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে অংশ নেন তারা হয়তো এই নতুন পোশাকের প্রচলন এড়িয়ে যেতে পারবে না। তারা চাইলে স্বল্প পোশাকের সাথে নিচে একটি আন্ডারওয়ার পরে নিতে পারেন। নায়ামী বলেন, ‘যদি আপনি কোনো হলিডেতে অংশ নেন, তাহলে পোশাকের ব্যাপারে অতটা সচেতন না হলেও চলবে। কারণ হলিডের অনুষ্ঠানগুলো সাধারণত খোলামেলা হয়।’ ভিডিও: