স্মার্ট কার্ড বদলে দেবে অনেক কিছু

0
301

অক্টোবর থেকে চালু হচ্ছে ‘স্মার্ট কার্ড’৷ তাই জাতীয় পরিচয় পত্রের বিপরীতে এই কার্ড নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে এরইমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক আগ্রহ৷ তবে কার্ডটি এখনই সবাই পাচ্ছেন না৷ এটি সবার হাতে যেতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত লেগে যাবে৷ নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, স্মার্ট কার্ড হবে ১০ ডিজিটের৷ এনআইডি-র মতো ১৩ কিংবা ১৬ ডিজিটের লম্বা লাইন থাকছে না এতে৷ তাছাড়া দেখতে অনেকটা ব্যাংকের এটিএম কার্ডের আদলে হচ্ছে এই কার্ড৷ আর এটি ব্যবহার করেই নাগরিকদের সব রকম সুযোগ-সুবিধা নিতে হবে৷ চালু হওয়ার পর, তিন স্তরের ২৫টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যের এই স্মার্ট কার্ড নাগরিকদের পরিচিতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়াবে৷ অর্থাৎ নাগরিকরা নানা ধরনের কাজে এই স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন৷ এর মধ্যে থাকবে ড্রাইভিং লাইসেন্স, টিআইএন, পাসপোর্ট, চাকরির আবেদন, স্থাবর সম্পত্তি কেনাবেচা, বিয়ে রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলা ও ব্যাংক ঋণ, শেয়ার-বিও অ্যাকাউন্ট, সরকারি বিভিন্ন ভাতা উত্তোলন, সরকারি কর্মচারীদের বেতন ও অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন উত্তোলন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, বিমানবন্দরে ‍আগমন ও বহির্গমন, বিমা স্কিম, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ, বিভিন্ন ধরনের ই-টিকিটিং, মোবাইল সংযোগ, হেল্থকার্ড, ই-ক্যাশসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় কাজ করা যাবে এর মাধ্যমে৷ মোট কথা, নাগরিকদের শনাক্তকরণের প্রশ্নে এই স্মার্ট কার্ডই হবে যথেষ্ঠ৷ তবে প্রচলিত এ সব কাজের বাইরেও আরো অনেক কাজে এই কার্ড ব্যবহার করা যাবে বলে ডয়চে ভেলেকে জানান এনআইডি অণুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন৷ তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন ই-গেটিং পদ্ধতি চালু রয়েছে৷ সেখানে আমাদের এই কার্ডগুলো ব্যবহার করা যাবে৷ আবার ধরুন, ভবিষ্যতে সার্ক দেশগুলো ভিসা উঠিয়ে দিয়ে এই ই-গেটিং চালু করতে পারে৷ তখন কিন্তু আমাদের এর জন্য নতুন করে প্রস্তুতি নিতে হবে না৷ আমাদের এই কার্ডই তখন গ্রহণযোগ্য হবে৷” এই স্মার্ট কার্ডে ভোটারদের সব তথ্য সংরক্ষিত থাকবে৷ তাছাড়া টু-ডি বারকোড-যুক্ত যন্ত্রে পাঠযোগ্য এই কার্ড সহজে নকল করা সম্ভব হবে না৷ বর্তমানে প্রচলিত লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়-পত্রে পাওয়া সুবিধার বাইরেও অসংখ্য কাজে ব্যবহার করা যাবে এ কার্ডটি৷ ভবিষ্যতের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিয়েই নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধার রেখে এই স্মার্ট কার্ড তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনআইডি অণুবিভাগের মহাপরিচালক৷ স্মার্ট কার্ড অনলাইন ও অফলাইন – দু’ভাবেই ব্যবহার করা যাবে৷ নাগরিকের তথ্য যাচাইয়ের জন্য বর্তমানে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চুক্তি রয়েছে৷ এ জন্য ইসি থেকে একটি সফটওয়্যার ফ্রিতে সরবরাহ করা হবে এবং ওই সফটওয়্যারের মাধ্যমে যে কেউ ভোটারদের তথ্য যাচাই করতে পারবেন৷ এক্ষেত্রে চাকরিদাতা কোনো প্রতিষ্ঠান বায়োডাটা না নিয়ে কেবল আইডি কার্ডের নম্বর দিয়েও যে কোনো ব্যক্তির তথ্য পেতে পারবে, যা অনেক বেশি নিরাপদ ও সহজতর হবে৷ জানা গেছে, জাতীয় পরিচয়-পত্র বা এনআইডি-র উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু হচ্ছে ২রা অক্টোবর৷ প্রাথমিক পর্যায়ে রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি এক বা একাধিক জেলার কার্ড বিতরণ করা হবে৷ পর্যায়ক্রমে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সব ভোটারকেই স্মাট কার্ড দেওয়া হবে৷ তবে এই কার্ড নেওয়ার সময় নাগরিকদের পুরনো ভোটার আইডি কার্ড জমা দেওয়ার পাশাপাশি ১০টি আঙুলের ছাপ ও চোখের মণির ছবি দিতে হবে৷ এক্ষেত্রে কারও কার্ড হারিয়ে গেলে প্রথমে পুরনো কার্ডটি তুলে তা জমা দিয়ে তারপর স্মার্ট কার্ড নিতে হবে৷ প্রসঙ্গত, দেশে এখন মোট ভোটার ৯ কোটি ৬০ লাখ৷ এদের মধ্যে ৯১ লাখ ভোটারের এনআইডি নেই৷ তবে যাদের নেই, তারাও পরে স্মার্ট কার্ড পাবেন৷ প্রথমবার স্মার্ট কার্ড নিতে নাগরিকদের কোনো অর্থ খরচ করতে হবে না৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here