আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানের পক্ষে গুপ্তচর বৃত্তির দায়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বিচার করা উচিত। আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু একাডেমির উদ্যোগে আয়োজিত চলমান রাজনীতি বিষয়ক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে। জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধুর সমপর্যায়ে দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়েছিল।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সাথে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতা পদক দেওয়া ছিল একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। আওয়ামী লীগ তা প্রত্যাখ্যান করেছিল।’ আওয়ামী লীগের এ নেতা আরো বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে গুপ্তচর বৃত্তির জন্য জিয়াউর রহমানের বিচারে সরকারের উচিত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।’ হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের দল মুক্তিযোদ্ধাদের দল হতে পারে না। কারণ বিএনপি মুক্তিযোদ্ধার দল হলে স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতের সাথে তাদের কোন জোট হতো না। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু থেকেই বিচার প্রক্রিয়াকে বিতর্কিত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তিনি জনমতের কাছে পরাজিত হয়ে নীরবতার পথ বেছে নিয়েছেন। কিন্ত জামায়াতকে জোটে যেমন রেখেছেন, তেমনি যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, বিএনপি মুক্তিযোদ্ধাদের দল নয়। বিএনপি পাকিস্তানের গুপ্তচর জিয়াউর রহমানের দল। আর এজন্য জিয়াউর রহমানের পাশাপাশি তার সহযোগীদেরও বিচার হওয়া উচিত। এ সময় স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহারের প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, রাজধানীতে বিএনপির দু-একটি ছোট মিছিল বের হলেও দেশের বাইরে কোথাও তাদের দেখা যাবে না। কারণ তারা জনবিচ্ছিন্ন। এ ছাড়াও মাহমুদ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে যুদ্ধাপরাধের দায়ে মীর কাশেম আলীর ফাঁসি কার্যকরের বিরুদ্ধে আনিত নিন্দা প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করেন ড. হাছান। তিনি বলেন, পাকিস্তান নিজের অখণ্ডতা নিয়ে সংকটের মধ্যে রয়েছে। কারণ সে দেশের বেলুচিস্তান ও সিন্ধু প্রদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চলছে। আর ওই দেশটিতে অন্য কোন ধর্মের লোক না থাকলেও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লেগেই আছে। তিনি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা না বলে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মনোযোগ দিন। তা ছাড়াও সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সাথে ঢাকায় সেদেশের দূতাবাসে সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রী ভিজিটিং কার্ড প্রদর্শন করে দেখা করলেন। এভাবে সাক্ষাতের আর কোন নজির কোথাও নেই। এই সাক্ষাতের সময় বিএনপি নেত্রী একটি মধ্যবতী নির্বাচনের দাবি জানালেও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী তাকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছেন বলে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের এ নেতা। সংগঠনের উপদেষ্টা চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর সাম্যবাদী দলের সভাপতি হারুণ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ইস্কান্দার মির্জা শামীম, কৃষকলীগ নেতা এম এ করিম ও বঙ্গবন্ধু একাডেমির মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজি।