পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে সময় মতো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের অবস্থান স্পষ্ট এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে পুলিশ কোনরকম ছাড় দিচ্ছে না। বীরত্ব ও সাহসিকতার সাথে পুলিশ অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে নিয়ে জঙ্গিবাদসহ সবধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবিলা করে যাচ্ছে। এ বাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে।
এ কে এম শহীদুল হক আজ রবিবার দুপুরে পুলিশ সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটে জঙ্গিবিরোধী অভিযান চলাকালে নিহত দু’জন পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারকে সম্মাননা ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
গত ২৫ মার্চ সিলেট মহানগর এলাকার শিববাড়িস্থ পাঠানপাড়ার আতিয়া ভিলার জঙ্গি আস্তানায় অভিযান পরিচালনাকালে জঙ্গিদের নিক্ষিপ্ত বোমার স্প্রিন্টারের আঘাতে এসএমপির কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক চৌধুরী মোহাম্মদ আবু কয়সর (৫০) ও জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম (৩৯) গুরুতর আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান।
আইজিপি অনুষ্ঠানে নিহত দুই পুলিশ সদস্যের প্রত্যেকের পরিবারকে পৃথকভাবে ২০ লাখ টাকা করে সঞ্চয়পত্র এবং সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) পক্ষ থেকে নগদ ৪ লাখ টাকা করে মোট ৮ লাখ টাকা প্রদান করেন।
ইতোপূর্বে এ ঘটনায় নিহত র্যাবের গোয়েন্দা প্রধান লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদের পরিবারকে নগদ ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন। অভিযানে আহত আরো ৭ পুলিশ সদস্যকে এ অনুষ্ঠানে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয।
আইজিপি বলেন, জঙ্গিবিরোধী অভিযান সফল করতে গিয়ে অপারেশন টোয়াইলাইট, অপারেশন ম্যাক্সিমাস, অপারেশন হিটব্যাক, অপারেশন স্ট্রাইক আউটসহ অভিযান পরিচালনা করতে হয়েছে। এসব অভিযানে আমরা লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ, সহকারি পুলিশ কমিশনার মো. রবিউল ইসলাম, ওসি সালাউদ্দিন, কনস্টেবল আনসারুল ও জহিরুলের মতো অনেক বীর সদস্যদের হারিয়েছি।
এ কে এম শহীদুল হক বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কতিপয় রাজনৈতিক নেতার দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যের প্রতি পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়েছে। পুলিশের সদস্যদের জঙ্গিবিরোধী অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার এ জাতীয় অপপ্রয়াস পুলিশ ও দেশবাসী দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। তিনি বলেন, বুঝে না বুঝে দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা সংগঠনের এ জাতীয় বক্তব্য জঙ্গিবাদকেই উৎসাহিত করবে।
জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় দেশবাসী যেখানে ঐক্যবদ্ধ সেখানে এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন, মনগড়া বক্তব্য পরিহার করার জন্য পুলিশ প্রধান আহবান জানান।
আইজিপি বলেন, জঙ্গিবাদ যে ধর্মীয় কারণে হচ্ছে না, তা আজ স্পষ্ট।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে আসা পবিত্র কাবা শরীফের খতিব ও মসজিদে নববীর (মদিনা) খতিবদ্বয় ঢাকায় অনুষ্ঠিত আলেম সম্মেলনে বলেছেন, ইসলামে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কোন স্থান নেই। তারা বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে পুলিশের প্রশংসাও করেছেন।