সিটিং সার্ভিস বন্ধ : যাত্রীদের ভোগান্তি-অভিযোগ-ক্ষোভ

0
253

গণপরিবহনে ‘সিটিং সার্ভিস’ বা ‘গেট লক সার্ভিস’ বন্ধ করতে আজ সকাল থেকেই অভিযানে নেমেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। সিটিং সার্ভিস বন্ধ হলেও ভাড়া আগের মতোই আদায় করা হচ্ছে। এ নিয়ে যাত্রীদের মধ্য অসন্তোষ চরমে। তা ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত অবস্থান নেওয়ায় রাস্তায় যানবাহনের উপস্থিতি কমে গেছে। এ নিয়েও ভোগান্তির শিকার যাত্রীরা।

পরিবহন মালিকদের সংগঠন ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতি ৪ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস ও গেট লক প্রথা বাতিলের ঘোষণা দেয়। কিন্তু গতকালও রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস ও গেট লক বাস চলতে দেখা গেছে। পরে গতকাল বিকালে এলেনবাড়িতে বিআরটিএর প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সিটিং সার্ভিস বন্ধে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ সকাল থেকেই সব সিটিং সার্ভিস বন্ধে অভিযান শুরু হয়। সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হলে নির্বাহী হাকিম জেল-জরিমানা করবেন। একই সঙ্গে বাসে বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা টাঙিয়ে রাখা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। কিন্তু রাজধানীর বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের কাছ থেকে আগের মতোই ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিআরটিএ’র নির্ধারিত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে না।

এ অভিযান বাস্তবায়নে ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির পক্ষ থেকে বিআরটিএ এবং যাত্রীদের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। আসাদগেট, আগারগাঁওয়ে আইডিবি ভবনের সামনে, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পশ্চিম পাশে, রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনে এবং যাত্রাবাড়ীর চাংপাই রেস্টুরেন্টের সামনে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানোর পরিকল্পনা করে বিআরটিএ।

রাজধানীর বাসগুলো অবশ্য সিটিং সার্ভিসমুক্ত হয়েছে। মিরপুর ও চিড়িয়াখানা থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলোতে সিটিং সার্ভিস ব্যবস্থা দেখা যায়নি। মতিঝিল, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী ও নিউমার্কেটগামী সিটিং সার্ভিস বাসগুলোতে যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। মহাখালী, কাকলী বনানী ও গুলশান এলাকায় অন্যদিনের তুলনায় খুব কম বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। সব রুটের বাসগুলোতেই প্রচণ্ড ভিড় লক্ষ করা গেছে। সিটিং বন্ধ হলেও অসংখ্য মানুষ আগের মতোই দাঁড়িয়ে আছেন। বাসে উঠতে পারছেন না। এ সুযোগে আবার অতিরিক্ত ভাড়ায় যাচ্ছে রিকশা আর সিএনজি। আবার অনেক যাত্রীর মতে, সিটিং সার্ভিস পুরোপুরি বন্ধ করা উচিত নয়। অনেক মানুষ একটু আরামে যাওয়া-আসা করতে চান। দিনশেষে ক্লান্তি নিয়ে অফিস থেকে বাড়ি ফেরার সময় বাসে একটা আসন চান তারা। তাই বাড়তি ভাড়া দিয়ে সিটিং সার্ভিসে যাতায়াতের ব্যবস্থা থাকা উচিত। এ সুযোগ বন্ধে তাই অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এক বিবৃতিতে জানান, ঢাকা মহানগরী ও আশপাশের জেলায় বড় বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটার ১ টাকা ৭০ পয়সা এবং মিনিবাসের ভাড়া ১ টাকা ৬০ পয়সা। বড় বাসের সর্বনিম্ন ভাড়া তিন কিলোমিটার পর্যন্ত সাত টাকা ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে পাঁচ টাকা।

বাসে ভাড়ার তালিকা পাওয়া না গেলে বিআরটিএর ওয়েবসাইটে অথবা যাত্রী কল্যাণ সমিতির কার্যালয়ে ৯৫৬৮৩৯৯ নম্বরে টেলিফোন করে অভিযোগ করা যাবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here