নতুন নগরপিতা পেয়েছে চট্টগ্রাম। আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী মো. রেজাউল করিম চৌধুরীই পরেছেন ‘বিজয়ের মুকুট’। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে শেষ হাসিটা ধরা দিয়েছে তাঁর মুখেই। চসিকের ২৭ বছরের ইতিহাসে রেজাউল হলেন ষষ্ঠ মেয়র। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত খবরে জানা গেছে, কিছুক্ষণের মধ্যেই রেজাউল করিমকে বেসরকারিভাবে মেয়র ঘোষণা করা হবে। ৩৯ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৩১ জনই আওয়ামী লীগ সমর্থিত। বাকি আটজন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হিসেবে পরিচিত।
এদিকে চসিক নির্বাচনের ইতিহাসে অতীতে কখনোই ভোটের দিন সংঘর্ষে লাশ দেখেনি চট্টগ্রাম। এবার রক্তাক্ত নির্বাচনই দেখল নগরবাসী। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ের ভেতরেই হয়েছে দুজনের প্রাণসংহার, রক্ত ঝরেছে শতাধিক ব্যক্তির। বিক্ষিপ্ত হাঙ্গামা, ধাওয়াধাওয়ি, গোলাগুলি, পুলিশের গাড়ি ও ইভিএম মেশিন ভাঙচুর, আগুন, প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামে গতকাল বুধবার শেষ হয় ভোট। প্রথমবারের মতো মেয়র পদে রাজনৈতিক দলের প্রতীকে এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে স্বতন্ত্র (নির্দলীয়) প্রতীকে এবং সব কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত এ ভোট নিয়ে উদ্দীপনার সঙ্গে ছিল উত্তেজনার রসদও।
বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর ও বিদ্রোহীদের পাশাপাশি কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর সমর্থকরা এসব সংঘাতে জড়িয়েছেন। গতকাল নগরের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও ভোটার বেশি আবার কোথাও কম। ভোটারদের উপস্থিতির চেয়ে কেন্দ্রের বাইরে ছিল লোকে লোকারণ্য। শেষ পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশ পাল্টে সংঘাতের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
গতকাল সাধারণ ছুটি না থাকায় সব কিছুই ছিল খোলা। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকটি পথে গণপরিবহন সীমিত চলাচল করলেও বেশির ভাগ সড়কে গাড়ি না পেয়ে কর্মজীবী মানুষ থেকে শুরু করে লাখো মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন। তবে বিকেলের পর থেকে যান চলাচল বাড়তে থাকলেও অফিসফেরত মানুষ দুর্ভোগে পড়ে।
সকাল ৮টায় ভোট শুরুর পর মেয়র পদপ্রার্থী ও সাধারণ সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরা যাঁর যাঁর কেন্দ্রে নিজেদের ভোট দিয়ে বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। এর মধ্যে মেয়র পদপ্রার্থী আওয়ামী লীগের মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ভোট দিয়ে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ‘ফল যা-ই হোক তা আমি মেনে নেব। দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট চলছে।’ অন্যদিকে বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন অভিযোগ করেন, তাঁর এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
নগরের লালখান বাজার, আগ্রাবাদ কমার্স কলেজ, ফিরিঙ্গীবাজার, চান্দগাঁও, ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী, ১৩ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী, ১২ নম্বর পাহাড়তলী, মুরাদপুর, পাথরঘাটা, বাকলিয়া, মোহরা, জালালাবাদসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশির ভাগ ঘটনা ঘটেছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে। এ সময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কয়েকজন নেতাকর্মীকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করে। এর মধ্যে পাথরঘাটায় বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ইসমাইল বালিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সংঘাতে দুই জীবনসংহার : সিটি নির্বাচনে রক্তক্ষয়ী সংঘাত হতে পারে এমন শঙ্কা ছিল আগেই। সকালে ভোট শুরুর পর গুলি ও ছুরিকাঘাতে দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। এ সময় ভাঙচুর করা হয় মোটরসাইকেল, বাস ও পুলিশবাহী গাড়ি। আহত ৩৭ জন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আওয়ামী লীগের ঘরোয়া বিরোধের কারণে সংঘাত হওয়ায় মাঠপর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হিমশিম খেতে হয়েছে। কখনো কখনো রক্ষণাত্মক ভূমিকা নিতে হয় পুলিশকে। ফলে বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী ও সন্ত্রাসীকে আটক করার পরও ছেড়ে দিতে হয়েছে পুলিশকে।
সংঘাতে মৃত্যু হয়েছে নগরের পাহাড়তলীর বার কোয়ার্টার এলাকা ও খুলশীর আমবাগান টেকনিক্যাল স্কুল কেন্দ্রে। এ ছাড়া সংঘর্ষ হয়েছে ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ও ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডের সব কেন্দ্র, পাথরঘাটা, চান্দগাঁও, আকরব শাহ থানার ফিরোজ শাহ কলোনিসহ নগরের বিভিন্ন কেন্দ্রে।
সকাল সাড়ে ৮টায় পাহাড়তলীর বার কোয়ার্টার এলাকায় ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে মারা যান নিজাম উদ্দীন মুন্না। তাঁর ভাই সালাউদ্দিন কামরুল আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী নুরুল আমিনের সমর্থক। আর নিজাম উদ্দিন মুন্না ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবের আহমদের সমর্থক। নির্বাচনী সংঘাতের জেরেই এক ভাই আরেক ভাইকে ছুরিকাঘাত করেছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের মা জিন্নাত আরা বেগম। তিনি বলেন, নির্বাচনে দুই ভাই দুই কাউন্সিলর প্রার্থীকে সমর্থন করেন।
নিজাম উদ্দিন মুন্না হত্যার ব্যাপারে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম বলেন, ‘দুই ভাইয়ের মধ্যে পূর্ববিরোধ ছিল। এর জেরেই ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে।’
দ্বিতীয় খুনের ঘটনা সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আমবাগান টেকনিক্যাল স্কুল কেন্দ্রের সামনে। আলাউদ্দিন আলম (২৩) নামের ওই যুবক গুলিতে মারা যান। আলাউদ্দিন সকালে কাজের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। কেন্দ্রের সামনে দুই পক্ষের গোলাগুলির মধ্যে পড়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
আলাউদ্দিনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক বলেন, ‘কেন্দ্রের বাইরে সংঘাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আলাউদ্দিন নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ অপরাধীদের ধরতে কাজ করছে।’
খুলশী পুলিশ জানায়, ওই ভোটকেন্দ্রের পাশে ছিন্নমূল কলোনির বাসিন্দা ছিলেন আলাউদ্দিন। নাশতা করে কাজে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হওয়া আলাউদ্দিন কেন্দ্রের সামনে দিয়ে যেতেই উত্তর পাশ থেকে গুলি ও পাথর ছোড়া শুরু হয়। সেই হামলাতেই গুলিবিদ্ধ হন আলাউদ্দিন। সেখানে আহত হয়েছেন নারীসহ আরো ছয়জন। আলাউদ্দিনকে নিজ নিজ সমর্থক দাবি করেছেন বিদ্রোহী প্রার্থী মো. মাহমুদুর রহমান ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী।
এ ঘটনা ছাড়াও খুলশীর সব কেন্দ্রই ছিল গোলযোগ ও সংঘাতপূর্ণ। সকাল থেকেই ১৪ নম্বর লালখান বাজার এলাকায় সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে একসময়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী দিদারুল আলম মাসুম গ্রুপ এবং আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়া কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আবুল হাসনাত মো. বেলালের অনুসারীরা। দুপুরে সেখান থেকে দিদারুল আলম মাসুমকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। লালখান বাজার এলাকায় সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হন। ওই ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আবদুল হালিম শাহ আলম অভিযোগ করেন, তাঁর ওয়ার্ডের সব কেন্দ্র দখল করে নেন আওয়ামী লীগের লোকজন। লালখান বাজার এলাকায় তুমুল সংঘাতে জড়ান আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এফ কবির মানিকের অনুসারীরা। এই বিদ্রোহীর সঙ্গেই ছিলেন দিদারুল আলম মাসুম।
এদিকে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাথরঘাটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের মধ্যে ধাওয়াধাওয়ির ঘটনা ঘটে। ওই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী পুলক খাস্তগীর, বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন বিজয় কৃষ্ণ দাশ ও অনুপ বিশ্বাস। সকাল ১১টার দিকে কেন্দ্রের ভেতরে প্রার্থীদের অনুসারীরা ঢুকে পড়ে। এ সময় তিনটি ইভিএম মেশিন ও কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষমাণ তিনটি বাস ভাঙচুর করা হয়। পরে নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মাসুদ পুলিশ সদস্যদের ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দেন। সংঘাতের সময় বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ইসমাইল বালিকে আটক করে পুলিশ কোতোয়ালি থানায় হেফাজতে রাখে। দুপুরে একই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিনকে ছুরিকাঘাত করা হয়। হামলাকারীরা বুথে ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দিচ্ছিল। এ সময় প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে তাদের বসচা শুরু হয়। একপর্যায়ে মাঈনুদ্দিনকে ছুরিকাঘাত করে এক সন্ত্রাসী। পরে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
৪ নম্বর চান্দগাঁও ওয়ার্ডে মৌলভী পুকুরপারের গ্রিন সাইন স্কুল কেন্দ্রের সামনে বিএনপিকর্মীরা আওয়ামী লীগের কেন্দ্র সচিব শাহাবুদ্দিন সান্টুকে (৪৫) কুপিয়েছে—এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর পদপ্রার্থী জহুরুল আলম জসিম ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী নুরুল আবছার মিয়ার অনুসারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘাত হয়েছে। এক কর্মীর মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর ফিরোজ শাহ এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা জানায়, দুপুর থেকেই আকবর শাহ থানার ফিরোজ কলোনি ও বিশ্ব কলোনি এলাকায় দুই কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। বিকেল পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘাত ও গুলি চলে। কাউন্সিলর পদপ্রার্থী নুরুল আবছার মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে জসিমের লোকজন। পরে জসিমকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে।’ জসিমকে ধরে নেওয়ার খবরে সড়ক অবরোধ করেন তাঁর অনুসারীরা। এ সময় ভাঙচুর হয় পুলিশ বহনকারী একটি মাইক্রোবাস। এ ব্যাপারে আকবর শাহ থানার ওসি জহির হোসেন জানিয়েছেন, সংঘাতের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এ ছাড়া আগ্রাবাদ কমার্স কলেজ এলাকায় দুই কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়াধাওয়ির ঘটনা ঘটে।
দিনভর নির্বাচনী সংঘাতে আহতদের মধ্যে ৩৭ জনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম।
বিএনপির নির্বাচনী এজেন্ট অনুপস্থিত : আটটি কেন্দ্র সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে কোনো কেন্দ্রেই বিএনপির নির্বাচনী এজেন্ট নেই। দুপুর ১২টা পর্যন্ত সেসব কেন্দ্রে ১০ থেকে ১৩ শতাংশ ভোট পড়েছে। আর প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রের ইভিএম বুথের পাশেই দুই থেকে তিনজনের একদল কর্মী ছিলেন। তাঁরা ভোট দেওয়ার জন্য বুথে চাপ প্রয়োগের সময় কৌশলে প্রভাব বিস্তার করছিলেন। তবে নির্বাচনে ওই আট কেন্দ্রে কোথাও সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। চট্টগ্রাম বন্দর, পতেঙ্গা, হালিশহর এলাকার আটটি নির্বাচনী কেন্দ্রের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটারের লাইন দেখা গেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। জানতে চাইলে ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার সুমন বড়ুয়া বলেন, ‘দুপুর ১২টা পর্যন্ত আমার কেন্দ্রে মাত্র একজনের ফিঙ্গার প্রিন্টের সঙ্গে মেশিনের মিল হয়নি। বাকিদের সবাই ঝামেলাহীনভাবেই ভোট দিয়েছেন।’
চেহারা দেখে ভোটারদের ঢুকানো হয় কেন্দ্রে : ভোট শুরুর আগে থেকে কেন্দ্র দখলের প্রতিযোগিতায় নামেন কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরা। নিজের ভোটার নিশ্চিত হয়ে শুধু চেহারা দেখে ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের এমন আচরণের কারণে ভোট দেওয়ার হার প্রত্যাশা অনুযায়ী হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক প্রিসাইডিং অফিসার। সকাল ৮টায় ভোট শুরু হওয়ার পর থেকেই দক্ষিণ কাট্টলী ১১ নম্বর ওয়ার্ড, রামপুর ২৫ নম্বর ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের জটলা থাকলেও ভেতরে অনেকটাই ফাঁকা। ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের আব্দুরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাইরে কথা হয় এই কেন্দ্রের ভোটার সাইফুর রহমানের সঙ্গে। তিনি অভিযোগ করেন, ‘ভোটার হওয়ার পরও কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁরা (টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকের কর্মী) বারবার জানতে চান কাকে ভোট দেব? প্রতিপক্ষকে দেব শোনার পর আমাকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।’ একই কথা বললেন রাবেয়া বসরী স্কুল কেন্দ্রের ভোটার আল আমীন গাজী। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে দুই দফা চেষ্টা করেছি কেন্দ্রে ঢোকার জন্য, কিছুতেই ঢুকতে দিচ্ছে না। কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের বলেও লাভ হচ্ছে না।’