মেট্রোরেলসহ প্রকল্পগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণেই রাজধানীতে জলাবদ্ধতা: তাপস

0
70

চলমান মেট্রোরেল প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রকল্পনির্ভর কাজ করা এবং সমন্বয়হীনতা ও সামগ্রিকভাবে চিন্তা না করার কারণেই ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় গুচ্ছাকারে (পকেট) জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

নিয়মিত সাপ্তাহিক পরিদর্শন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আজ বুধবার (৩০ জুন) নগরীর ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের টিকাটুলীতে খেলার মাঠ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ মন্তব্য করেন তিনি।

কিছু কিছু এলাকার সীমিত কিছু অংশে গুচ্ছাকারে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে – এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র তাপস বলেন, ‘আজ এখান থেকে আমরা শনির আখড়া যাব। সেখানে আমরা কাজলা খাল উদ্ধার করেছি। কিন্তু তার পরও পানি নিষ্কাশন এখনো পুরোপুরি হচ্ছে না। সেখানকার প্রতিবন্ধকতা হলো, সেখানে প্রকল্প (মেট্রোরেল প্রকল্প) চলছে এবং সে প্রকল্পের কারণে পানি নিষ্কাশন সঠিকভাবে হচ্ছে না। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি, দেনদরবার করছি। আসলে ঢাকা শহরে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে, সামগ্রিকতা চিন্তা না করে প্রকল্প নির্ভর কাজ করার কারণে সমস্যাগুলো রয়ে যাচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে সমন্বয় করে কাজ করা যায় এবং দীর্ঘ মেয়াদে সমস্যার সমাধান করা যায়।’

ঢাদসিক মেয়র আরো বলেন, ‘আপনারা আমার সঙ্গে ঘুরে ঘুরে দেখছেন এবং নিশ্চয় অনুমান করতে পারছেন, উন্মুক্ত জায়গায় বর্জ্য ফেলা এবং যত্রতত্র নির্মাণ সামগ্রী রাখা বা প্লাস্টিকের বোতল ফেলার কারণে সেগুলো নর্দমার মুখ বন্ধ করে দিচ্ছে এবং ভেতরে বদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা দেখেছি, সেগুলো দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার করা হয়নি।’

‘নগরবাসী জলাবদ্ধতা নিরসন কার্যক্রমের সুফল আগামী বছর থেকে পাওয়া শুরু করবে’ উল্লেখ করে তাপস বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কাজ করে যাচ্ছে। এবছর সে কাজের সুফল না পেলেও আগামী বছরগুলোতে নগরবাসী তা পাওয়া শুরু করবে।’ অবকাঠামো উন্নয়নে যে কাজগুলো হাতে নেওয়া হয়েছে, তা শেষ হলেই নগরবাসী ক্রমান্বয়ে জলাবদ্ধতার ভোগান্তি থেকে মুক্তি লাভ করবে বলেও জানান তিনি।

মতিঝিল এলাকার জলাবদ্ধতার প্রশ্নে ঢাদসিক মেয়র বলেন, ‘এই এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল, সেই কাজটি ঠিকাদার সময়মতো শেষ করতে পারেনি। আমি দায়িত্ব পাওয়ার পরই সময়মতো  কাজ শেষ না করায় ঠিকাদারকে বাদ দিয়েছি এবং নতুন করে দরপত্র আহ্বান করে কাজ শেষ করা হয়েছে। এছাড়া ফকিরাপুলের টয়েনবি সার্কুলার রোডে জলাবদ্ধতা নিরসনেও কাজ চলছে। এগুলো শেষ হলে জলাবদ্ধতার প্রকোপ থাকবে না।’

ঢাদসিক মেয়র আরো বলেন, ‘এই মাঠে খেলার কোনো পরিবেশ ছিল না। এখন খেলার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আজ থেকে মাঠটি উন্মুক্ত করা হলো। এখন থেকে ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলা করতে পারবে।’

‘এভাবে নির্বাচনী ইশতেহার পূরণে কাজ করা হচ্ছে’ উল্লেখ করে ঢাদসিক মেয়র বলেন, ‘আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য পর্যাপ্ত খেলার মাঠ তৈরি করতে চাই।’

এর আগে দক্ষিণ সিটির মেয়র নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মুক্তাঙ্গনে অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র উদ্বোধন এবং ফকিরাপুল মোড় হতে মতিঝিল পেট্রল পাম্প এলাকা পর্যন্ত জলাবদ্ধতা নিরসনে উন্নয়ন কাজ ও নর্দমা পরিষ্কারকরণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তাপস। পরে তিনি রায়েরবাগ থেকে শনির আখড়া পর্যন্ত কয়েকটি জলজটপ্রবণ এলাকা পরিদর্শন এবং আজিমপুর শিশুপার্ক উদ্বোধন করেন।

এসময় অন্যদের মধ্যে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. জাফর আহমেদ, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী  খায়রুল বাকের ও মুন্সি আবুল হাশেম, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডগুলোর কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here