গরমে আরামে ফ্যাশনে থাকুক শাড়ি

0
17

বাঙালি নারীর সবচেয়ে প্রিয় পোশাক শাড়ি। যদিও গরমরে তীব্রতা রয়েছে তারপরেও শাড়ির কদর কমেনি এতটুকুও। আধুনিকতা ও ঐতিহ্যে বছরজুড়ে শাড়িতেই নিজের সৌন্দর্যকে মেলে ধরেন ফ্যাশন সচেতন নারীরা।

গরমের এই সময়টাতে অনেকেই সুতি শাড়িকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। এটি আরামদায়ক ও ঘাম শুষে নিতে পারে। সাবেকি ঘরনার হলেও সুতি শাড়ি কিন্তু দারুণ স্টাইলিশ। শুধু সুতি শাড়িইবা কেন, গরমে বেছে নিতে পারেন মনিপুরি শাড়ি, জুম শাড়ি, জামদানি শাড়ি ও খেশ শাড়ি।

Anjan`s Saree Summer

সুতি শাড়ি আরামদায়ক, এর রূপ ও রং বৈচিত্র্য সব বয়সীদের জন্য মানানসই। সময়ের ব্যবধানে সুতি শাড়ির আঁচল এবং পাড়ে নানা বৈচিত্র্য নিয়ে এসেছেন ফ্যাশন ডিজাইনাররা। কুঁচিতে যেমন থাকছে আলাদা ডিজাইন তেমনি কোনো কোনো সুতি শাড়ির বুননেই থাকছে পাড়। আবার আলাদা নকশা করা পাড়ও জুড়ে দেয়া হচ্ছে পুরো শাড়িতে। জমিনে খেলা করে বাহারি নকশা। কিছু সুতি শাড়ির জমিন, আঁচল, পাড়ে রয়েছে কাঁথা স্টিচ, ফুলেল প্রিন্ট, জামদানি প্রিন্ট, অ্যাপ্লিক, গুজরাটি কাজের মতো বাহরি নকশা।

সিলেট বিভাগে বাস করে বাংলাদেশের অন্যতম নৃ-গোষ্ঠী মণিপুরী সম্প্রদায়। এ সম্প্রদায়ের নারীদের খ্যাতি আছে হাতে বোনা তাঁতের কাপড়ের জন্য। তারাই তৈরি করেন জনপ্রিয় মণিপুরী শাড়ি। এ শাড়ির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গাঢ় বা হালকা যে রঙেরই হোক না কেন পাড়ের রং হবে গাঢ়। পাড়ের নকশাটি সাধারণত হয়ে থাকে ত্রিভুজাকৃতির। আর ভেতরটায় থাকে লতাপাতার নকশা হালকা সুতোয় বোনা।

Anjan`s Saree Summer

জুম শাড়িতে খুব একটা গরম অনুভব হয় না এবং অনেক আরামদায়ক। ফলে শীত কিংবা গরম যেকোনো সময়ের জন্য উপযোগী জুম শাড়ি। এ শাড়িতে সাধারণত লিলেন সুতা ও সিল্ক সুতার মিশ্রণ থাকে। এই শাড়িগুলো হ্যান্ডলুম হলেও সুতা দেশীয় নয়। তাঁতীরা জুম শাড়ি বুনতে সাধারণত বিশেষ ধরনের লিলেন সুতা ব্যবহার করেন যা আমদানি করতে হয় কোরিয়া থেকে। এ সুতার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে হাত দিলে অনেক ঠাণ্ডা লাগে। খানিকটা নেট জাতীয় বলে অনেকে একে মোটা কোটাও বলে থাকেন। ফ্যাশন সচেতন নারীদের কাছে তাঁতে বোনা জুম শাড়িগুলো বেশ জনপ্রিয়।

বাঙালি নারীর সবচেয়ে পছন্দের শাড়ি জামদানি। এ শাড়ির আরেক নাম ‘ঢাকাই শাড়ি’। জাম শব্দের অর্থ ফুল এবং দানি মানে ফুলদানি, দুইয়ে মিলে জামদানি। মূলত এ ধরনের শাড়িতে ফুলপাতার নকশাই বেশি দেখা যায়। একসময় মুঘলদের অনুপ্রেরণা ও পৃষ্ঠপোষকতায় এ শাড়ির বাহার আরও বেড়ে গিয়েছিল। প্রথমদিকে সুতির সুতা দিয়েই এই শাড়ি বোনা হত। যত সুতির সুতা, তত দামি জামদানি। পরে সিল্কের সুতা ব্যবহার করা শুরু হয়। জামদানি চার রকমের হতে পারে, ঢাকাই, ধনিয়াখালি, শান্তিপুরি ও টাঙ্গাইল। যেকোনো ঋতুতেই জামদানি শাড়ি আরামদায়ক। বিশেষ করে এ গরমে বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও জামদানি শাড়ি অনায়াসে পরতে পারেন।

Anjan`s Saree Summer

খেশ শাড়ির মূল বৈশিষ্ট্য হলো পুরোনো কাপড় ছাড়া এটি তৈরি করা যায় না। অন্যভাবে বললে, পুরোনো কাপড়ে নতুন রূপ ও প্রাণ সঞ্চার করে খেশ। পুরাতন কাপড় দিয়ে খেশ তৈরি হয় বলে এই শাড়ি পরতেও আরাম। সাধারণত খেশ শাড়িগুলো এক রঙের হয়ে থাকে। টাঙ্গাইলে খেশ শাড়ি তৈরি হয়ে থাকে। তাঁতীরা নান্দনিক সব ডিজাইন ফুঁটিয়ে তুলেন শাড়িতে। প্রতিদিন একজন তাঁতী মাত্র দু’টি শাড়ি বুনতে পারেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here