নির্বাচন পূর্ব ও পরবর্তী ধর্মীয় সম্প্রীতি সুরক্ষায় আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত

0
13

গত শুক্রবার (১৯ আগষ্ট) সকালে ঢাকার মোহম্মদপুরের ইকবাল রোডে ইয়ং উইমেন’স খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন (ওয়াইডব্লিউসিএ) বাংলাদেশের সম্মেলন কক্ষে ৬ষ্ঠ তলায় অনুষ্ঠিত নির্বাচন পূর্ব ও পরবর্তী ধর্মীয় সম্প্রীতি সুরক্ষায় আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) সহায়তায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রুরাল অ্যান্ড আরবান পুরর্স পার্টনার ফর সোস্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট (রূপসা) এই সংলাপ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন (আইআরআই) রেসিডেন্ট প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ক্রেগ হ্যালস্টেড।

রূপসার নিবার্হী পরিচালক হিরণ্ময় মণ্ডল সভাপতিত্বে আন্তঃধর্মীয় এই সংলাপে বক্তব্য রাখেন –আইআরআই’র সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার অমিতাভ ঘোষ, রূপসা’র প্রজেক্ট ম্যানেজার সামিয়া জামান সুমি, লালবাগ শ্রী শ্রী কালী মন্দিরের প্রধান পুরোহিত পণ্ডিত প্রকাস চক্রবর্তী, লালবাগ মসজিদের খতিব মাওলানা মোতাহার হোসেন আজাদী, কল্যাণপুর ক্যাথলিক চার্চের পুরোহিত বিষ্ণুপদ রোমিও।

জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা রোধে মানবতা বেশি জরুরি বলে মনে করেন ধর্মীয় নেতা, সাংবাদিক ও বিশিষ্টজনেরা। তাদের দাবি, প্রত্যেকটি নাগরিকের মধ্যে দেশপ্রেম ও সাংবিধানিক চেতনা থাকা দরকার। এক্ষেত্রে নির্বাচনের পূর্বে, নির্বাচনকালীন ও পরবর্তী সময়ে যেকোনো ধরণের সহিংসতা রোধে সবার মধ্যে সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সহমর্মিতা ও মানবতা থাকা দরকার। কারণ সহিংসতা রোধে ও মানবিক সংকটে মানবাতা বোধ ও সহমর্মিতাই আমাদের পথ দেখায়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রায় সকলেই সহিংসতা রোধে একমত পোষণ করে বক্তব্য তুলে ধরেন। তারা বলেন, নির্বাচনী সহিংসতায় ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে সুযোগ সন্ধানীরা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে মরিয়া থাকে এবং সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট, নারী নির্যাত, জমি দখল এমনকি হত্যা করতে উদ্যত হয়।

এক্ষেত্রে রাজনৈতিক আগ্রাসী দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ও সচেতনা বৃদ্ধি করা, ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ও সচেতনতা, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ও সচেতনতা। প্রত্যেক এলাকায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ইমামদের মাধ্যমে সহিংসতা রোধে মাইকে বক্তব্য প্রদান, নির্বাচন কালীন সময়ে সকল রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে সহিংসতা রোধে স্থানীয় পর্যায়ে কমিটি গঠন, সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচার ট্রাইব্রুনালে বিচার করে সবোর্চ্চ শাস্তির বিধান করা, ফেইজবুক-ইউটিউবের শাখা অফিস বাংলাদেশে স্থাপন করে নিয়ন্ত্রণ করা ইত্যাদি করনীয় সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়।

এক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে গুজব ছড়ানো হয়। তরুণ সমাজসহ শিক্ষার্থী, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সকলকে সচেতন হয়ে সমাজের মধ্যে সামাজিক এবং ধর্মীয় সম্প্রীতির বার্তা ছড়াতে হবে। সবার মধ্যে বিভ্রান্তি দূর করে সঠিক ও গ্রহণযোগ্য তথ্য পৌঁছে দিতে হবে। সহমর্মিতার মাধ্যমে সহিংসতা ও হানাহানি এড়িয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করা জরুরি।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা ছাড়াও মানবাধিকারকর্মী, সংবাদকর্মী এবং স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

সংলাপ পর্ব শেষে অংশগ্রহনকারীরা সহিংসতা রোধে করনীয় সম্পর্কে সুপারিশমালা বা প্রস্তাবনা লিখিতভাবে সংগঠনের কাছে হস্তান্তন করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here